ঢাকা ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার সাতক্ষীরা উপকূলে বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচী পালিত বালিয়াকান্দিতে এ্যাসেডের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী পালিত ভোলা প্রেসক্লাবে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মত বিনিময়  আত্রাইয়ে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাস্তা থেকে উঠলো ব্যারিকেড, কর্মজীবনে ফিরল অর্ধশত পরিবার

মোঃওয়াজ কুরনী-দিনাজপুর:
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩ ১১৯ বার পঠিত

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হায়দারনগর গ্রামে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে চলাচলের রাস্তার মাঝখানে সিমেন্টের খুঁটি পুঁতে এবং বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্থানীয় তোজাম্মেল হক।

এতে একজন মানুষ হেটে চলাচল করতে পারলেও, বের হতে পারছে না তিন চাকার কোন বাহন। তাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে নদী ভাঙ্গন এলাকা থেকে উঠে আসা প্রায় অর্ধশত ভাঙারী পরিবার।

এই নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তা প্রশাসনের নজরে আসে। রবিবার বিকেলে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাকিল আহমেদ এবং পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহম্মেদের নির্দেশে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান এবং ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ। এসময় সেখানে সংশ্লিষ্ট ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তিন পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করেন। তাৎক্ষনিক রাস্তার মাঝে থেকে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী খুঁটি ও বাঁশ সরিয়ে নেয়। এতে রাস্তাটি দিয়ে তিন চাকার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে কর্মজীবনে ফিরল ভাঙারি ব্যবসায় জড়িত অর্ধশত পরিবার। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিজেদের মধ্যকার সমস্যা নিরসন এবং জায়গা জমি সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা নিরসনের আশ্বাসে খুশি তিন পক্ষই।

তবে ভূক্তভোগী পরিবার এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের মাঝে নিজের জমির মাপযোগ নিয়ে কিছুটা জটিলতা থাকার কথা তারা উপস্থিত কর্মকর্তাদেরকে জানায়। আগামী বুধবার (১৬ আগষ্ট) সরকারী সার্ভেয়ারের মাধ্যমে তাদের জায়গা মাপযোগের মাধ্যমে নিজেদের মাঝে চলে আসা সমস্যা স্থায়ী ভাবে সমাধানের আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

স্থানীয় ভূক্তভোগী এবং ভাঙারী ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, আমরা গত ১৬ দিন যাবত ভ্যান নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে না পারায় কর্মহীন ছিলাম। আজ প্রশাসনের লোকজন এসে আমাদের সদস্যা নিরসন করে দিয়ে গেছে। এতে আমরা অনেক খুশি।

ভূক্তভোগী আরেক নারী মনোয়ারা বেগম বলেন, রাস্তা দিয়ে গত সপ্তাহ দুই সপ্তাহ যাবত চলাচল করা যায়নি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। আমরা অনেকের কাছে গিয়েছি। সর্বশেষ প্রশাসনের লোকজন এবং আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাস্তা খুঁটি সরিয়ে দিয়ে গিয়েছে।

জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন তোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, আমার এক পাশ্ববর্তী আত্মীয়ের সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। তিনি তার জায়গার উপর থাকা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাঁধা প্রদান করায় আমার জায়গার উপর থাকা রাস্তায় আমি খুঁটি পুতেছিলাম। থানার ওসি এবং ইউএনও এসেছিলেন। তারা আমাদের উভয়ের সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তাৎক্ষণিক আমি নিজেই রাস্তার উপর থেকে খুঁটি ও বাঁশ সরিয়ে নিয়েছি। তাদের কার্যক্রমে আমি সন্তুষ্ট।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে ইউএনও স্যার সহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পরে উভয়কে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তারা উভয়ের আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে আগামীতে তারা আর এ ধরণের ঘটনা ঘটাবে না।

এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি জানার পরেই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে আমি নির্দেশনা দিয়েছিলাম। আমাদের জেলা প্রশাসক স্যারও সমস্যা সমাধানে আমাকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা রাস্তাটি আবারো আগের মত চলাচল উপযোগী করেছি। তাদের মাঝে আরো কিছু ছোটখাটো ঝামেলা আছে নিজেদের জায়গা জমি নিয়ে। তা আগামী বুধবার সরকারী সার্ভেয়ারের দ্বারা মাপযোগের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করে দেয়া হবে।

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাস্তা থেকে উঠলো ব্যারিকেড, কর্মজীবনে ফিরল অর্ধশত পরিবার

আপডেট সময় : ০৩:৪৬:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার হায়দারনগর গ্রামে দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে চলাচলের রাস্তার মাঝখানে সিমেন্টের খুঁটি পুঁতে এবং বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্থানীয় তোজাম্মেল হক।

এতে একজন মানুষ হেটে চলাচল করতে পারলেও, বের হতে পারছে না তিন চাকার কোন বাহন। তাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে নদী ভাঙ্গন এলাকা থেকে উঠে আসা প্রায় অর্ধশত ভাঙারী পরিবার।

এই নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তা প্রশাসনের নজরে আসে। রবিবার বিকেলে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাকিল আহমেদ এবং পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহম্মেদের নির্দেশে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান এবং ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ। এসময় সেখানে সংশ্লিষ্ট ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তিন পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসন করেন। তাৎক্ষনিক রাস্তার মাঝে থেকে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী খুঁটি ও বাঁশ সরিয়ে নেয়। এতে রাস্তাটি দিয়ে তিন চাকার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে কর্মজীবনে ফিরল ভাঙারি ব্যবসায় জড়িত অর্ধশত পরিবার। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিজেদের মধ্যকার সমস্যা নিরসন এবং জায়গা জমি সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা নিরসনের আশ্বাসে খুশি তিন পক্ষই।

তবে ভূক্তভোগী পরিবার এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের মাঝে নিজের জমির মাপযোগ নিয়ে কিছুটা জটিলতা থাকার কথা তারা উপস্থিত কর্মকর্তাদেরকে জানায়। আগামী বুধবার (১৬ আগষ্ট) সরকারী সার্ভেয়ারের মাধ্যমে তাদের জায়গা মাপযোগের মাধ্যমে নিজেদের মাঝে চলে আসা সমস্যা স্থায়ী ভাবে সমাধানের আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

স্থানীয় ভূক্তভোগী এবং ভাঙারী ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, আমরা গত ১৬ দিন যাবত ভ্যান নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে না পারায় কর্মহীন ছিলাম। আজ প্রশাসনের লোকজন এসে আমাদের সদস্যা নিরসন করে দিয়ে গেছে। এতে আমরা অনেক খুশি।

ভূক্তভোগী আরেক নারী মনোয়ারা বেগম বলেন, রাস্তা দিয়ে গত সপ্তাহ দুই সপ্তাহ যাবত চলাচল করা যায়নি। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। আমরা অনেকের কাছে গিয়েছি। সর্বশেষ প্রশাসনের লোকজন এবং আমাদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাস্তা খুঁটি সরিয়ে দিয়ে গিয়েছে।

জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিলেন তোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, আমার এক পাশ্ববর্তী আত্মীয়ের সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছিল। তিনি তার জায়গার উপর থাকা রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাঁধা প্রদান করায় আমার জায়গার উপর থাকা রাস্তায় আমি খুঁটি পুতেছিলাম। থানার ওসি এবং ইউএনও এসেছিলেন। তারা আমাদের উভয়ের সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই তাৎক্ষণিক আমি নিজেই রাস্তার উপর থেকে খুঁটি ও বাঁশ সরিয়ে নিয়েছি। তাদের কার্যক্রমে আমি সন্তুষ্ট।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে ইউএনও স্যার সহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পরে উভয়কে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তারা উভয়ের আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে আগামীতে তারা আর এ ধরণের ঘটনা ঘটাবে না।

এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনাটি জানার পরেই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে আমি নির্দেশনা দিয়েছিলাম। আমাদের জেলা প্রশাসক স্যারও সমস্যা সমাধানে আমাকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা রাস্তাটি আবারো আগের মত চলাচল উপযোগী করেছি। তাদের মাঝে আরো কিছু ছোটখাটো ঝামেলা আছে নিজেদের জায়গা জমি নিয়ে। তা আগামী বুধবার সরকারী সার্ভেয়ারের দ্বারা মাপযোগের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করে দেয়া হবে।