তানোরে ভারীবর্ষণে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, ক্ষতির মুখে মৎস্যচাষিরা
- আপডেট সময় : ০১:২৯:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩ ১২৩ বার পঠিত
রাজশাহীর তানোরে ৪ দিন ধরে ভারী বর্ষণ ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় আড়াই হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বিভিন্ন কৌশলে ঘের দিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছচাষিরা।
এছাড়াও গ্রামকে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক রাস্তা-ঘাট ডুগে গেছে। এরমধ্যে তানোর পৌর এলাকার নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত আমশো তাঁতিয়ালপাড়া, গোকুল মথুরা, তালন্দ, ধানতৈড় ছাড়াও কালিগঞ্জ এবং শিবনা দমদমার বেশ কয়েকটি পুকুর ভেসে ক্ষতি হয়েছে বেশি। এসব পুকুরে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল।
উপজেলা মৎস্য বিভাগের হিসাবমতে, পুরো উপজেলায় ব্যক্তি মালিকানা পুকুরের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। আর সরকারি খাসপুকুর রয়েছে এক হাজারের মতো। গত ২ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে ঢলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে এসব পুকুর তলিয়ে যায়। আজ ৬ সেপ্টেম্বর এরির্পোট লেখা পর্যন্ত উপজেলার আড়াই হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের সংখ্যা আরও বাড়বে। এসব পুকুরে বিভিন্ন জাতের বড় মাছ ও পোনা ছিল। এতে টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি। এসব পুকুরে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন মাছ ছিল। পোনা ছিল প্রায় ২৫ লাখ। নির্ভরযোগ্য মৎস্যচাষী ও ব্যবসায়ী সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এবিষয়ে তানোর পৌর এলাকার আমশো তাঁতিয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বুলবুল ও সিহাব জানান, মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমানের পুত্র নাজমুল হাসান একজন বড় মৎস্য চাষি। তিনি ব্যক্তি মালিকানা শতাধিক বিঘার ১২টি পুকুর বছর চুক্তি লীজ নিয়ে মাছচাষ করেন। তার কামলা (লেবার) হিসেবে মাছের খাদ্য প্রদান ও পুকুর দেখভাল করেন তারা। আমশো, মথুরাপুর ও তাঁতিয়ালপাড়া মৌজায় এসব একেকটি পুকুর ২০ থেকে ৮ বিঘা পর্যন্ত জলাধর। কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে এসব পুকুর ভরে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। বড় মাছগুলোর ওজন ছিল দুই থেকে আড়াই কেজি।
ধানতৈড় গ্রামের কাজি আলী বলেন, ভারী বর্ষণে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ৩০টি পুকুরে কেবল বড় মাছ ছিল। সব ভেসে গেছে। এখন পথে বসার অবস্থা। একই এলাকার মাছচাষি বুলবুল জানান, তারও পাঁচটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এ মাসেই সব মাছ বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সর্বনাশ হয়ে গেছে।
মৎস্যচাষী নাজমুল হাসান বলেন, তিনি ব্যাংক ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকা লোন নিয়ে পুকুরে মাছচাষ ব্যবসা করে আসছেন। এঅবস্থায় গত ৪ দিনের ভারী বর্ষণ ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে তার সব পুকুর প্লাবিত হয়ে মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। কোন মতেই রক্ষা করা যাচ্ছে না। চাষকৃত এসব মাছ বিক্রি করে এনজিও গুলোর কিস্তি চালান। এখন কি করব বলে চিন্তিত হয়ে হতাশ হয়ে পড়েন হাসান।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু মুষুলধারে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জন্য বের হওয়া সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি শেষে ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের সংখ্যা নোট করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্র্রহণ করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।