ঢাকা ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভোলা প্রেসক্লাবে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মত বিনিময়  আত্রাইয়ে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে

কেশবপুরে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে

আজিজুর রহমান-কেশবপুর(যশোর):
  • আপডেট সময় : ০৯:০২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩৩ বার পঠিত

কেশবপুরে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে দেখা দিয়েছে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। যার কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন মৃৎশিল্পের পরিবারের লোকজন।

মৃৎশিল্পের জন্য এক সময় কেশবপুর উপজেলার সুনাম ছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতে না হতেই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প।তাই বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার বা পালরা এ পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মৃৎশিল্প ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল,বাসন-কোসন, ঢাকনা, কলসি, ছোট বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী, পেয়ালাসহ প্রভৃতি তৈরি করত। তাঁদের তৈরি পুতুল যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতা ও অভাব অনটনের কারণে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, আলতাপোল,কন্দপপুর,বুড়িহাটি,বরণডালী,হাড়িঘোপ,ভেরচী,পাঁজিয়া,মঙ্গলকোটসহ বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়ির মৃৎশিল্পীরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

সোমবার ৪ ডিসেম্বর দুপুরে সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ঘুরে দেখা গেছে এ উপজেলায় প্রায় দু শতাধিক মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। পাড়ার সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রনজিৎ পাল,জয়দেব পাল,গৌতম পাল,দেবু নাথ পাল,রতন পাল, আলতাপোল গ্রামের,স্বপন পাল,অধির পাল,এ প্রতিনিধি কে জানান,কেউ প্রতিমা আবার কেউ ছোট হাঁড়ি তৈরি করেন।
তাদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান অনুন্নত। এখন মাত্র কয়েকটি পরিবারের কারিগরেরা বাপ-দাদার আদি পেশা কোনোমতে আঁকড়ে ধরে আছেন।তাঁদের পেশার দৈন্যদশার সঙ্গে সঙ্গে সংসার জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র।

অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই হয়। এজন্য সেটি বাজার দখল করে নিয়েছে।মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী।

উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াঘোপ গ্রামের নারাণ পাল এ প্রতিনিধি কে বলেন,আমরা মাটি দিয়ে যেসব জিনিস বানায়,সেগুলো আর আগের মত বেচঁতে পারিনা। কি করব? অন্য কাম (কাজ) করতে পারিনা। তাই বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরেই আছি। এখন আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। সেডা দেখার কেউ নেই।যার কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব পরিবারের লোকজন। ২০/২৫ বছর আগে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র কেশবপুর বাজার সহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ও বাজারে কদর ছিল বেশ।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পের কারিগর কার্তিক পাল বলেন,আমি এখন মৃত শিল্প তৈরির কাজ ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় এখন ধীরে ধীরে এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিলুপ্তির পথে দেখা দিয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্র। কিন্তু খেজুরের রস ও গুড়ের জন্য এ উপজেলায় মাটির তৈরি ভাড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে।

ট্যাগস :

কেশবপুরে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে

আপডেট সময় : ০৯:০২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

কেশবপুরে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে দেখা দিয়েছে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। যার কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন মৃৎশিল্পের পরিবারের লোকজন।

মৃৎশিল্পের জন্য এক সময় কেশবপুর উপজেলার সুনাম ছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতে না হতেই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প।তাই বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার বা পালরা এ পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মৃৎশিল্প ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল,বাসন-কোসন, ঢাকনা, কলসি, ছোট বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী, পেয়ালাসহ প্রভৃতি তৈরি করত। তাঁদের তৈরি পুতুল যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতা ও অভাব অনটনের কারণে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, আলতাপোল,কন্দপপুর,বুড়িহাটি,বরণডালী,হাড়িঘোপ,ভেরচী,পাঁজিয়া,মঙ্গলকোটসহ বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়ির মৃৎশিল্পীরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

সোমবার ৪ ডিসেম্বর দুপুরে সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ঘুরে দেখা গেছে এ উপজেলায় প্রায় দু শতাধিক মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। পাড়ার সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রনজিৎ পাল,জয়দেব পাল,গৌতম পাল,দেবু নাথ পাল,রতন পাল, আলতাপোল গ্রামের,স্বপন পাল,অধির পাল,এ প্রতিনিধি কে জানান,কেউ প্রতিমা আবার কেউ ছোট হাঁড়ি তৈরি করেন।
তাদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান অনুন্নত। এখন মাত্র কয়েকটি পরিবারের কারিগরেরা বাপ-দাদার আদি পেশা কোনোমতে আঁকড়ে ধরে আছেন।তাঁদের পেশার দৈন্যদশার সঙ্গে সঙ্গে সংসার জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র।

অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই হয়। এজন্য সেটি বাজার দখল করে নিয়েছে।মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী।

উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াঘোপ গ্রামের নারাণ পাল এ প্রতিনিধি কে বলেন,আমরা মাটি দিয়ে যেসব জিনিস বানায়,সেগুলো আর আগের মত বেচঁতে পারিনা। কি করব? অন্য কাম (কাজ) করতে পারিনা। তাই বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরেই আছি। এখন আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। সেডা দেখার কেউ নেই।যার কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব পরিবারের লোকজন। ২০/২৫ বছর আগে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র কেশবপুর বাজার সহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ও বাজারে কদর ছিল বেশ।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পের কারিগর কার্তিক পাল বলেন,আমি এখন মৃত শিল্প তৈরির কাজ ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় এখন ধীরে ধীরে এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিলুপ্তির পথে দেখা দিয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্র। কিন্তু খেজুরের রস ও গুড়ের জন্য এ উপজেলায় মাটির তৈরি ভাড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে।