সাভারে মাদক মামলায় ফাসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
- আপডেট সময় : ০২:১৮:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩ ২১৬ বার পঠিত
সাভারে বাসায় প্রবেশ করে মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে লাবনী আক্তার (৩৫)নামের এক গৃহবধূর কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাভার মডেল থানার এক সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই)এর বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩ মে) সকালে এ অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী নারী। এর আগে সোমবার (১লা মে) সন্ধ্যা রাতে সাভারের আমিনবাজার হিজলা গ্রামের ডুলুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন- সাভারের আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাহতাব ও আমিনবাজারের হিজলা গ্রামের আব্দুল মান্নান।
ভুক্তভোগী হলেন সাভারের আমিনবাজার হিজলা গ্রামের বাসিন্দা ডুলুর স্ত্রী লাবনী আক্তার (৩৫) ।
ভুক্তভোগী নারী লাবনী আক্তার বলেন, আমার স্বামী ডুলুর শারিরীক অবস্থা খুব খারাপ। ডাক্তার বলেছেন তিনি ৩/৪ মাসের বেশি বাঁচবেন না।
গত (১লা মে) সোমবার রাতে এএসআই মাহতাব কয়েকজন পুলিশ নিয়ে আমার বাড়িতে যায়। পরে পুলিশ সদস্যদেরকে বাসায় রেখে একজন পুলিশ নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে। বাসায় ঢুকে সে আমার রুমের দরজা বের বন্ধ করে দেয় এবং আমাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতে থাকে।
এক পর্যায়ে সে আমার নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবী করে বলে টাকা না দিলে সে আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে। এ সময় তিনি তার সাথে থাকা হ্যান্ডকাপ বের করেন এবং আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করতে যান। আমি অনেক কান্নাকাটি করলেও তারা শুনেন না। পরে আমি তাদের পায়ে ধরি। তাও তারা শুনেন না। এর কিছুক্ষণ পরে মান্নান নামের একজন আমাদের ঘরে প্রবেশ করে এবং আমাকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য বলে । আমি কোথায় টাকা পাবো। আমার স্বামী অসুস্থ এমন কথা বলে কান্নাকাটি করতে থাকলে তারা আমাকে বলে তুই মাদক ব্যবসা করস। তোর প্রতিদিন ১৫/২০ হাজার টাকা ইনকাম।
আমি কোনো মাদক ব্যবসা করিনা বলে অনেক কান্নাকাটি করলে আমাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে বলে, টাকা ম্যানেজ করে এনে দেওয়ার জন্য আমাকে আধাঘন্টা সময় দেয় এবং মান্নান বলে আমরা আমার অফিসে গিয়ে বসতেছি তুই টাকা নিয়ে আয়। আমি অনেক কষ্টে টাকা ম্যানেজ করে এএসআই মাহতাবে কে ২৫ হাজার টাকা দেই।
ভুক্তভোগী নারী আরও বলেন, ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার পরে মাহতাব স্যার আমাকে বলে তুই মাদকরে ব্যবসা করবি। প্রতিমাসে আমাকে মাসে ২০ হাজার টাকা দিবি। আমি কোনো ডিস্টাব করবো না। আমি বলি স্যার আমি কোনো মাদক ব্যবসা করি না আর আমি আপনাদের কোনো টাকা পয়সা দিতে পারবো না। পরে তারা চলে যায়।
অভিযুক্ত মান্নানের ব্যাপারে লাবনী আক্তার বলেন, মান্নান আমার পূর্ব পরিচিত। সেও অনেক খারাপ লোক। সে আমাকে অনেক খারাপ প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় সে আমার পিছনে লেগে আছে। আমার এই এলাকায় কেউ নাই। আমার স্বামী অসুস্থ, ঘরে পরে আছে। তাই মান্নান আমার সাথে নানা ধরনের খারাপ কাজ করতে চায়।
আমিনবাজার ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া বলেন, মান্নান এলাকায় অনেক খারাপ কাজ করে। সে একজন খারাপ লোক। সে মূলত পুলিশের সোর্স।
অভিযুক্ত মান্নানের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযুক্ত আমিনবাজার ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাহতাব বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি এখন ব্যস্ত আছি, আমি আপনাকে পরে ফোন দিচ্ছি। এক কথা বলেই মোবাইলের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানাধীন আমিন বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন-অর-রশিদ বলেন, এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ যেহেতু উঠেছে বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি।
সাভার মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, এ রকম ঘটনা আমার জানা নেই। ভুক্তভোগীকে থানায় অভিযোগ দিতে বলেন, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।