ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট সময় : ০১:০৮:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ ৬৩ বার পঠিত
ভোলায় এক মা তার বড় সন্তানের বিরুদ্ধে জমি বিক্রি করা টাকা আত্মসাৎ ও বসত বাড়ি থেকে মা ও ছোট ভাইদের বের করে দিয়ে তা দখলে নেওয়া এবং বাবার মালিকানা জমি নিজের নামে কৌশলে লিখে নেওয়ার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মা ফরিদা ইয়াছমিন।
বুধবার (৮ মে) একটি স্থানীয় পত্রিকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের বড় ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। বিরুদ্ধে মা ফরিদা ইয়াছমিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
শুধু মায়ের সম্পদ নয়, আপন ৩ সহোদরের জমিও নিজের দখলে নেওয়া ও তাদের মারধর করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে বড় ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এর বিরুদ্ধে।
লিখিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ। আমি ফরিদা ইয়াছমিন, স্বামী- সৃত মোঃ শাহজাহান, ঠিকানা- ৩নং ওয়ার্ড, কালীবাড়ী রোড, ভোলা পৌরসভা, ভোলা। আমার স্বামী বিআরডিবির কর্মকর্তা ছিলেন। আমার স্বামী বিগত ২০১১ সালে মারা যায়। আমার চার ছেলে। আমার বড় ছেলের নাম মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
আমার এই ছেলের বর্তমান বয়স ৪৫ বৎসর। আমার ছেলে ছোট বেলা থেকেই উন্ন, উদ্ধৃঙ্খল ও বখাটে স্বভাবের ছিলো। সে আমার সাথে, তার বাবা, অন্যান্য ভাইদের সাথে ও পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে সর্বদা খারাপ আচরন করতো। সে মোটরসাইকেল, দামী মোবাইল ইত্যাদির জন্য প্রায়শই তার বাবা ও আমার সাথে ঝড়গা বিবাদে জড়াতো। এমন পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র করার সিদ্ধান্ত নেয়। আমার ও আত্মীয় স্বজনদের অনুরোধে তিনি তা না করে মৃত্যু বরন করেন। আমার বড় ছেলে ২০০৭ সালে আলীনগরের বাসিন্দা মোঃ নাগর এর মেয়ে মুক্তা… বিবাহ করে। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমার স্বামীর রেখে যাওয়া কালীবাড়ী রোডের ১১ শতাংশ জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের জন্য আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। টাকার প্রয়োজনে অন্যান্য জমি বিক্রির জন্য আমার বড় ছেলেকে দায়িত্ব দেই। সে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে আমাকে ৬০ লাখ টাকা দেয়। বাকি ৪০ লাখ টাকা আত্বসাৎ করে। পরে জানতে পারি সে টাকা আমার বড় ছেলে সুদের উপর লাগায় ও মাদকের ব্যবসা করে। আমার বড় ছেলে দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ আমার সাথে ও আমার অন্যান্য ছেলেদের সাথে কথা বলে না। তবে প্রতিদিনই আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ, হুমকি-ধামকি এমনকি আমাদেরকে আমার স্বামীর বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করে আসছে। সন্তান হিসাবে সে মা/বাবার কোন দায়িত্ব কিংবা ভরন পোষনের দায়িত্ব কখনো পালন করেনি। আমাদের বসত বাড়ি নির্মাণের সকল খরচ আমার বড় ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নিজ হাতে খরচ করেছে। সেখান থেকেও সে মোটা অংকের টাকা আত্বসাৎ করে। ভবন নির্মানের পর উক্ত ভবনে উঠে এবং আমাকে ও অন্য তিন ভাইকে তার বাবার সম্পত্তি থেকে বেদখল ও বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাকে তার বাবার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে সে তার বাবার পুরো সম্পত্তি এবং আমার বাবার বাড়ি থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি একা তার নামে লিখে দেয়ার দাবী করে। তার এ অযৌক্তিক দাবী না মানলে সে আমাকেসহ আমার অন্যান্য সন্তানদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার বড় ছেলে শালিশ বিচার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ খোদা কাউকে মানে না। আমার বড় ছেলে কোন কাজ কর্ম করে না, সে আমার স্বামীর ও আমার অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ করে সুদে ও মাদক কারবারি করে অর্থ উপার্জন করে। আমার ছেলে বিয়ে করার পর তার স্ত্রী ও শ্বশুর মোঃ নাগরের সহযোগীতায় তার শক্তি আরো বেড়ে যায়। আমার ছেলের স্ত্রী.মরা আমাকে ও আমার তিন সন্তানকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েই যাচ্ছে। জানতে পারি আমার ছেলের শশুর মোঃ নাগর সাবেক মেম্বার আলীনগর এর ইন্দনে ও উস্কানিতে এমন অপকর্ম করছে। আমার বড় ছেলে ও তার স্ত্রী আমাকে ও আমার বাকি তিন ছেলেকে মারধর করে আমাদের বিল্ডিং ঘর থেকে বের করে দেয়ার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালায়। আমার বড় ছেলে ও তার স্ত্রীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। আমারা দেশের নাগরিক ও ভোলা পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছি না। একজন মা কখন তার সন্তানের বিরুদ্ধে কথা বলে? সন্তান যখন তিলে তিলে মাকে যন্ত্রণা দিয়ে অতিষ্ট করে ফেলে মাকে মারধর করে, মেরে ফেলার হুমকি দেয় তখন আর মায়ের কিছু করার থাকে না। আমি আপনাদের মাধ্যমে ভোলার অভিবাবক সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ এর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই আমার এই সন্তান ও তার স্ত্রীর অত্যাচারের হাত থেকে আমাকেসহ আমার তিন সন্তানকে বাঁচান। ভোলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসকের নিকট ও জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপারের নিকট আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।