ঢাকা ০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

শেরপুরে ১৯ শিক্ষককে অব্যহতি, ২০ পরীক্ষার্থী বহিস্কার

শেখ সাইদ আহমেদ সাবাব - শেরপুর :
  • আপডেট সময় : ১২:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ৫৬ বার পঠিত

শেরপুরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারসহ ১৯ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর আদান-প্রদান ও নকলের দায়ে ২০ পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তিন উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

অব্যাহতি প্রাপ্ত শ্রীবরদীর ৫, ঝিনাইগাতীর ৭ ও নালিতাবাড়ীর ৭ জন শিক্ষক।
আর বহিস্কার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নালিতাবাড়ীর ১৮ ঝিনাইগাতীর ২ জন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার ২২ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের তিন উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে ১৯ শিক্ষককে অব্যহতি, ২০ পরীক্ষার্থী বহিস্কার করা হয়। আজ চলমান দাখিলের গণিত বিষয় ও এসএসসির ইংরেজি ২য় বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। নালিতাবাড়ী উপজেলার তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি উঠিয়ে বাইরে পাঠিয়ে উত্তর সংগ্রহ করে খাতায় লিখছিলো। পরে ওই পরীক্ষার্থীর মোবাইল হাতে নেওয়ার পর একই মোবাইল থেকে আরও একটি মোবাইলে ওয়াফাই যুক্ত দেখে অন্য পরীক্ষার্থীদের সার্চ করে। এসময় একে একে ১৫ জন পরীক্ষার্থীকে পরস্পর একইভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সংগ্রহ করার প্রমাণ মেলে। এসব স্মার্ট ফোন পরীক্ষার্থীরা পায়ের উরুতে রাবার দিয়ে বেঁধে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে অসদুপায় অবলম্বন করছিল। একই সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার ও নকলের দায়ে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় দায়িত্বরত মোট ৫ জন শিক্ষককে। মোবাইল ফোনে অসদুপায় অবলম্বনকারী ১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জনই শুধুমাত্র এক বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল। এছাড়াও অসদুওপায়ে ব্যবহৃত ১৫টি স্মার্ট ফোন জব্দ করা হয়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র ও আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৃথকভাবে এ আদেশ দেওয়া হয়।
এ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মওদুদ আহমেদ হল পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি তার নজরে আসে।
অন্যদিকে নালিতাবাড়ীর আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল। এসময় গেল বছর অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর উল্লেখ করে সিট নির্ধারণ না করায় দুই শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল জানান, মেবাইল ও নকল ব্যবহারের কারণে নালিতাবাড়ীতে ১৮ জন পরীক্ষার্থী বহিস্কার এবং ৫ জন শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শ্রীবরদী উপজেলার আকবরিয়া পাবলিক পাইলট ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে ৫ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার শুরুর কিছুক্ষণ পর শিক্ষকদের সার্চ করলে মোবাইল পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, ‘নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দায়িত্বরত ৫ জন শিক্ষককে দুই বছরের জন্য পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা নিতে আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।

ঝিনাইগাতীতে দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষকদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এ দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়। সচিব, হল সুপার ও ৫শিক্ষককে অব্যহতি, ২ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া জানান, পরীক্ষা চলাকলীন সময়ে পরীক্ষার সাথে যুক্ত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারির দ্বায়িত্ব অবহেলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সুন্দর ও সুষ্ট পরিবেশে বাকি পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা হবে।।

ট্যাগস :

শেরপুরে ১৯ শিক্ষককে অব্যহতি, ২০ পরীক্ষার্থী বহিস্কার

আপডেট সময় : ১২:১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

শেরপুরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারসহ ১৯ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে মোবাইল ফোনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর আদান-প্রদান ও নকলের দায়ে ২০ পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তিন উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

অব্যাহতি প্রাপ্ত শ্রীবরদীর ৫, ঝিনাইগাতীর ৭ ও নালিতাবাড়ীর ৭ জন শিক্ষক।
আর বহিস্কার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে নালিতাবাড়ীর ১৮ ঝিনাইগাতীর ২ জন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার ২২ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের তিন উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে ১৯ শিক্ষককে অব্যহতি, ২০ পরীক্ষার্থী বহিস্কার করা হয়। আজ চলমান দাখিলের গণিত বিষয় ও এসএসসির ইংরেজি ২য় বিষয়ে পরীক্ষা চলছিল। নালিতাবাড়ী উপজেলার তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী স্মার্ট ফোনে ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি উঠিয়ে বাইরে পাঠিয়ে উত্তর সংগ্রহ করে খাতায় লিখছিলো। পরে ওই পরীক্ষার্থীর মোবাইল হাতে নেওয়ার পর একই মোবাইল থেকে আরও একটি মোবাইলে ওয়াফাই যুক্ত দেখে অন্য পরীক্ষার্থীদের সার্চ করে। এসময় একে একে ১৫ জন পরীক্ষার্থীকে পরস্পর একইভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তর সংগ্রহ করার প্রমাণ মেলে। এসব স্মার্ট ফোন পরীক্ষার্থীরা পায়ের উরুতে রাবার দিয়ে বেঁধে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে অসদুপায় অবলম্বন করছিল। একই সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার ও নকলের দায়ে মোট ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় দায়িত্বরত মোট ৫ জন শিক্ষককে। মোবাইল ফোনে অসদুপায় অবলম্বনকারী ১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জনই শুধুমাত্র এক বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল। এছাড়াও অসদুওপায়ে ব্যবহৃত ১৫টি স্মার্ট ফোন জব্দ করা হয়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার তারাগঞ্জ ফাজিল মাদরাসার দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্র ও আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৃথকভাবে এ আদেশ দেওয়া হয়।
এ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মওদুদ আহমেদ হল পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি তার নজরে আসে।
অন্যদিকে নালিতাবাড়ীর আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজী দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল। এসময় গেল বছর অকৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর উল্লেখ করে সিট নির্ধারণ না করায় দুই শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিশায় রিছিল জানান, মেবাইল ও নকল ব্যবহারের কারণে নালিতাবাড়ীতে ১৮ জন পরীক্ষার্থী বহিস্কার এবং ৫ জন শিক্ষককে পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শ্রীবরদী উপজেলার আকবরিয়া পাবলিক পাইলট ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে ৫ শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার শুরুর কিছুক্ষণ পর শিক্ষকদের সার্চ করলে মোবাইল পাওয়া যায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, ‘নির্দেশনা অমান্য করে পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার করায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দায়িত্বরত ৫ জন শিক্ষককে দুই বছরের জন্য পরীক্ষার সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা নিতে আমরা সর্বদা তৎপর রয়েছি।

ঝিনাইগাতীতে দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষকদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এ দন্ডাদেশ প্রদান করা হয়। সচিব, হল সুপার ও ৫শিক্ষককে অব্যহতি, ২ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভুইয়া জানান, পরীক্ষা চলাকলীন সময়ে পরীক্ষার সাথে যুক্ত কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারির দ্বায়িত্ব অবহেলা কোন ভাবেই কাম্য নয়। সুন্দর ও সুষ্ট পরিবেশে বাকি পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা হবে।।