ঢাকা ০১:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার সাতক্ষীরা উপকূলে বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচী পালিত বালিয়াকান্দিতে এ্যাসেডের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী পালিত ভোলা প্রেসক্লাবে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মত বিনিময়  আত্রাইয়ে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম

কেশবপুরে অবহেলা আর যত্নের অভাবে হারাতে বসেছে প্রত্নতাত্ত্বিক হাম্মামখানার সৌন্দর্য

আজিজুর রহমান-কেশবপুর(যশোর):
  • আপডেট সময় : ০৭:৪২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ৯৭ বার পঠিত

কেশবপুরে অবহেলা আর যত্নের অভাবে হারাতে বসেছে প্রত্নতাত্ত্বিক হাম্মামখানার সৌন্দর্য।
কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের অবস্থিত হাম্মামখা। কপোতাক্ষ নদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত সবুজের মায়ায় ঘেরা নয়নাভিরাম মীর্জানগর গ্রাম। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নুরল্লা খাঁ ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে কিল্লাবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করতেন। এটা পূর্ব-পশ্চিমে দীর্ঘ। সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে, আট-দশ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করে এটাকে মতিঝিল নামকরণ করেন, এর একাংশে বতকখানা, জোনানাসহ হাম্মামখানা (গোসলখানা) ও দুর্গের পূর্বদিকে সদর তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। কামান দ্বারা দুর্গটি সুরক্ষিত ছিল। তখন কার যুগে মীর্জানগরের সেই কামানের একটি যশোরের মণিহার মোড়ে সংরক্ষিত আছে।

হাম্মামখানা বাদে আজ আর কিছুই অক্ষত নেই। পূর্ব-পশ্চিম লম্বা চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং একটি কূপ সমেত হাম্মামখানাটি মোগল স্থাপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়। স্থাপনাটি চার গম্বুজ বিশিষ্ট। এর পশ্চিম দিকে পরপর দুটি কক্ষ। পূর্বদিকের কক্ষ দুটি উঁচু চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর জানালাগুলো এমন উঁচু করে তৈরি যাতে এর ভিতরে অবস্থাকালে বাইরে থেকে শরীরের নিম্নাংশ দেখা না যায়। পূর্বপার্শ্বে দেয়াল বেষ্টনীর ভেতর রয়েছে ৯ ফুট ব্যাসের ইটের নির্মিত সুগভীর কূপ। সে কূপ হতে পানি টেনে তুলে এর ছাদের দু’টি চৌবাচ্চায় জমা করে রৌদ্রে গরম করে দেয়াল অভ্যন্তরে গ্রথিত পোড়ামাটির নলের মাধ্যমে স্নান কক্ষে সরবরাহ করা হতো। স্থাপনাটির দক্ষিণ পার্শ্বে একটি চৌবাচ্চা এবং একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে যা তোষাখানা ছিল বলে অনুমিত হয়। ১৯৯৬ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং সংস্কার করে।

তবে হতাশার বিষয় এটাই যে, প্রায় ৩৭৫ বছরের মোঘল আমলের এই স্থাপনাটি যত্নের অভাবে বেহাল অবস্থায় রয়েছে, দেওয়ালের অনেক জায়গায় রং নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি এই ভবনের খিলানগুলোতে স্থানীয়রা তাদের জ্বালানি শুকানোর কাজে ব্যবহার করে। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে এটার সদর দরজা তালাবদ্ধ করে রেখে দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। মোগল আমলের বেশিরভাগ নিদর্শন বর্তমানে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই দ্রুত এ হাম্মামখানাটির যথাযথ সংস্কার করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক এটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।

ট্যাগস :

কেশবপুরে অবহেলা আর যত্নের অভাবে হারাতে বসেছে প্রত্নতাত্ত্বিক হাম্মামখানার সৌন্দর্য

আপডেট সময় : ০৭:৪২:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

কেশবপুরে অবহেলা আর যত্নের অভাবে হারাতে বসেছে প্রত্নতাত্ত্বিক হাম্মামখানার সৌন্দর্য।
কেশবপুর উপজেলার মির্জানগর গ্রামের অবস্থিত হাম্মামখা। কপোতাক্ষ নদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত সবুজের মায়ায় ঘেরা নয়নাভিরাম মীর্জানগর গ্রাম। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে নুরল্লা খাঁ ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে কিল্লাবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করতেন। এটা পূর্ব-পশ্চিমে দীর্ঘ। সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে, আট-দশ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করে এটাকে মতিঝিল নামকরণ করেন, এর একাংশে বতকখানা, জোনানাসহ হাম্মামখানা (গোসলখানা) ও দুর্গের পূর্বদিকে সদর তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। কামান দ্বারা দুর্গটি সুরক্ষিত ছিল। তখন কার যুগে মীর্জানগরের সেই কামানের একটি যশোরের মণিহার মোড়ে সংরক্ষিত আছে।

হাম্মামখানা বাদে আজ আর কিছুই অক্ষত নেই। পূর্ব-পশ্চিম লম্বা চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং একটি কূপ সমেত হাম্মামখানাটি মোগল স্থাপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়। স্থাপনাটি চার গম্বুজ বিশিষ্ট। এর পশ্চিম দিকে পরপর দুটি কক্ষ। পূর্বদিকের কক্ষ দুটি উঁচু চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর জানালাগুলো এমন উঁচু করে তৈরি যাতে এর ভিতরে অবস্থাকালে বাইরে থেকে শরীরের নিম্নাংশ দেখা না যায়। পূর্বপার্শ্বে দেয়াল বেষ্টনীর ভেতর রয়েছে ৯ ফুট ব্যাসের ইটের নির্মিত সুগভীর কূপ। সে কূপ হতে পানি টেনে তুলে এর ছাদের দু’টি চৌবাচ্চায় জমা করে রৌদ্রে গরম করে দেয়াল অভ্যন্তরে গ্রথিত পোড়ামাটির নলের মাধ্যমে স্নান কক্ষে সরবরাহ করা হতো। স্থাপনাটির দক্ষিণ পার্শ্বে একটি চৌবাচ্চা এবং একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে যা তোষাখানা ছিল বলে অনুমিত হয়। ১৯৯৬ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং সংস্কার করে।

তবে হতাশার বিষয় এটাই যে, প্রায় ৩৭৫ বছরের মোঘল আমলের এই স্থাপনাটি যত্নের অভাবে বেহাল অবস্থায় রয়েছে, দেওয়ালের অনেক জায়গায় রং নষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি এই ভবনের খিলানগুলোতে স্থানীয়রা তাদের জ্বালানি শুকানোর কাজে ব্যবহার করে। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে এটার সদর দরজা তালাবদ্ধ করে রেখে দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। মোগল আমলের বেশিরভাগ নিদর্শন বর্তমানে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই দ্রুত এ হাম্মামখানাটির যথাযথ সংস্কার করে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক এটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।