কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি তৈজসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে
- আপডেট সময় : ০৯:৪৩:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৯৯ বার পঠিত
মৃৎশিল্পের জন্য একসময় কেশবপুর উপজেলার সুনাম ছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতে না হতেই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প।
তাই বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার বা পালরা এ পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মৃৎশিল্প ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল,বাসন-কোসন, ঢাকনা, কলসি, ছোট বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী, পেয়ালাসহ প্রভৃতি তৈরি করত। তাঁদের তৈরি পুতুল যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতা ও অভাব অনটনের কারণে যশোরের কেশবপুর উপজেলার আলতাপোল সহ বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়ির মৃৎশিল্পীরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর সকালে সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, এ উপজেলায় প্রায় দু শতাধিক পরিবার রয়েছে। পাড়ার সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রনপাল,আলতাপোল গ্রামের,স্বপন পাল,অধির পাল,জানান,কেউ প্রতিমা আবার কেউ ছোট হাঁড়ি তৈরি করেন। তাদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান অনুন্নত। এখন মাত্র কয়েকটি পরিবারের কারিগরেরা বাপ-দাদার আদি পেশা কোনোমতে আঁকড়ে ধরে আছেন।
তাঁদের পেশার দৈন্যদশার সঙ্গে সঙ্গে সংসার জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে। মাটির তৈরি তৈজসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্র। অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্রের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই হয়। এজন্য সেটি বাজার দখল করে নিয়েছে।
মাটির তৈরি তৈজসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী মাটির তৈরি তৈজসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী।
উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াঘোপ গ্রামের নারাণ পাল এ প্রতিনিধি কে বলেন,আমরা মাটি দিয়ে যেসব জিনিস বানায়,সেগুলো আর আগের মত বেচতে পারিনে। কি করব? অন্য কাম (কাজ) করতে পারিনে। তাই বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরেই আছি। এখন আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। সেডা দেখার কেউ নেই।’
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পের কারিগর কার্তিক পাল বলেন,আমি এখন মৃত শিল্প তৈরির কাজ ছেড়ে দিয়েছে
কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় এখন ধীরে ধীরে এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।
ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি তৈজসপত্র বিলুপ্তির পথ থেকে রক্ষার জন্য সরকারি-বেসরকারি,এনজিওসহ সকল দপ্তরের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’