ঢাকা ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার সাতক্ষীরা উপকূলে বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচী পালিত বালিয়াকান্দিতে এ্যাসেডের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী পালিত ভোলা প্রেসক্লাবে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মত বিনিময়  আত্রাইয়ে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম

ব্রহ্মপুত্রের বুকে গর্জে উঠেছে লগি-বইঠা,দুই পাড়ে হাজার হাজার মানুষের ঢল

মো: আলা আমিন, জামালপুর :
  • আপডেট সময় : ০৯:৩১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯৯ বার পঠিত

জামালপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে দুইদিনব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতায় দীর্ঘদিন পর নদের বুকে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে গর্জে উঠেছে বাংলার বাঘ, সোনার তরী, হীরার তরী ও মনিরাজসহ ১৫টি নৌকার মাঝি মাল্লার বৈঠা।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পৌরসভার ছনকান্দা এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। এতে প্রথমদিনের মতো জামালপুর-শেরপুরসহ বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার দর্শকের ঢল নামে নদীর দুই পাড়ে।

স্থানীয় ও আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, একসময় প্রতিবছরই এই নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই অনুষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর দুইদিনব্যাপী জামালপুর পৌরসভা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় এই নৌকা বাইচের আয়োজন করেন ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতি। প্রতিযোগিতার প্রথমদিন জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ১৫টি নৌকা অংশ নেয়। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার বিকেলে। এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাড়ে ও ব্রিজের রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে এবং নৌকায় চড়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। এদিকে বাইচ উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও খেলনার পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এতে মিলনমেলায় পরিণত হয় নদীর দুই পাড়। ১৫টি নৌকা থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে প্রথম পুরুষ্কার হিসেবে দেড় লক্ষ টাকা এবং রানারআপ হিসেবে এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর ইসলাম, জুয়েল রানা, সাব্বির হোসেন, আমিনুল ইসলামসহ আরো অনেকের সাথে। তারা জাগো নিউজকে বলেন, একসময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই নৌকা বাইচের আয়োজন করা হতো। এখন আর এই প্রতিযোগিতা তেমন একটা দেখা যায় না। বর্ষায় পানি না থাকা, অবৈধভাবে নদী দখলসহ বিভিন্ন কারণে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে মানুষের মাঝে উৎসাহ কমেনি। তারই প্রতিফলন আজকের এই হাজার মানুষের সমাগম। গতকাল থেকেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আজকে মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হলো। আমরা চাই প্রতিবছর যেনো এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজক কমিটির সদস্য ও মেলান্দহ উপজেলার মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘরের ট্রাস্টি হিল্লোল সরকার বলেন, নৌকা বাইচ হচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এটি যেনো হারিয়ে না যায় সেকারণেই মূলত তাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনকে ঘিরে মানুষের এমন উৎসাহ উদ্দীপনা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের ইচ্ছে প্রতিবছর এখানে নৌকা বাইচের আয়োজন করা।

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতির সভাপতি হাসান মাহমুদ রাজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম এমপি। উদ্বোধন করেন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, জামালপুর পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু।

ট্যাগস :

ব্রহ্মপুত্রের বুকে গর্জে উঠেছে লগি-বইঠা,দুই পাড়ে হাজার হাজার মানুষের ঢল

আপডেট সময় : ০৯:৩১:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জামালপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে দুইদিনব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতায় দীর্ঘদিন পর নদের বুকে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে গর্জে উঠেছে বাংলার বাঘ, সোনার তরী, হীরার তরী ও মনিরাজসহ ১৫টি নৌকার মাঝি মাল্লার বৈঠা।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পৌরসভার ছনকান্দা এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। এতে প্রথমদিনের মতো জামালপুর-শেরপুরসহ বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার দর্শকের ঢল নামে নদীর দুই পাড়ে।

স্থানীয় ও আয়োজক কমিটি সূত্র জানায়, একসময় প্রতিবছরই এই নদীতে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু বিশ্বায়নের এই যুগে এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে এই অনুষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর দুইদিনব্যাপী জামালপুর পৌরসভা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় এই নৌকা বাইচের আয়োজন করেন ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতি। প্রতিযোগিতার প্রথমদিন জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে মোট ১৫টি নৌকা অংশ নেয়। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় শনিবার বিকেলে। এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদের দুই পাড়ে ও ব্রিজের রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে এবং নৌকায় চড়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। এদিকে বাইচ উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও খেলনার পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। এতে মিলনমেলায় পরিণত হয় নদীর দুই পাড়। ১৫টি নৌকা থেকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এতে প্রথম পুরুষ্কার হিসেবে দেড় লক্ষ টাকা এবং রানারআপ হিসেবে এক লাখ টাকা প্রদান করা হয়।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর ইসলাম, জুয়েল রানা, সাব্বির হোসেন, আমিনুল ইসলামসহ আরো অনেকের সাথে। তারা জাগো নিউজকে বলেন, একসময় জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই নৌকা বাইচের আয়োজন করা হতো। এখন আর এই প্রতিযোগিতা তেমন একটা দেখা যায় না। বর্ষায় পানি না থাকা, অবৈধভাবে নদী দখলসহ বিভিন্ন কারণে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। তবে মানুষের মাঝে উৎসাহ কমেনি। তারই প্রতিফলন আজকের এই হাজার মানুষের সমাগম। গতকাল থেকেই এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। আজকে মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হলো। আমরা চাই প্রতিবছর যেনো এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

আয়োজক কমিটির সদস্য ও মেলান্দহ উপজেলার মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘরের ট্রাস্টি হিল্লোল সরকার বলেন, নৌকা বাইচ হচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এটি যেনো হারিয়ে না যায় সেকারণেই মূলত তাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনকে ঘিরে মানুষের এমন উৎসাহ উদ্দীপনা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের ইচ্ছে প্রতিবছর এখানে নৌকা বাইচের আয়োজন করা।

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে ঢাকাস্থ জামালপুর সমিতির সভাপতি হাসান মাহমুদ রাজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম এমপি। উদ্বোধন করেন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন, জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, জামালপুর পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু।