ঢাকা ০১:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

পাইকগাছায় ৩৯বছরেও কাজে লাগেনি সাব-জেলখানা

মোঃ ফসিয়ার রহমান- পাইকগাছা (খুলনা):
  • আপডেট সময় : ০৯:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩ ১৫৭ বার পঠিত

খুলনায় থেকে দূরত্বের বিবেচনায় পাইকগাছা উপজেলায় ৩৯ বছর আগে সোয়া দুই একর জমির উপর নির্মাণ করা হয় সাব জেলখানা। কিন্তু সেই জেলখানা আজও আলোর মুখ দেখেনি।

তদারকির অভাবে পাইকগাছা আদালতের পাশে জেলখানার জন্য নির্মিত উচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত ভবনসহ সম্পদ-সম্পত্তি এখন অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। এখানে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিলেও ৩৯ বছরের মধ্যে কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। আয়ের বিভিন্ন খাত থাকলেও রাজস্ব খাতে জমা পড়েনি কোনো অর্থ।

সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলা সদর থেকে পাইকগাছার দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার এবং কয়রা সদরের দুরত্ব ১০০ কিলোমিটার দুই উপজেলার আদালত ও জেলখানার গুরুত্ব ভেবে সরকার পাইকগাছায় পাইকগাছা এবং কয়রায় আদালত স্থাপন করে। পাইকগাছায় জেলখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৮৪ সালের ২৯ মে পাইকগাছা সদরে বাতিখালী মৌজায় এর জন্য ২.২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের ১৩ বছর ধরে জেলখানার জন্য চারিদিকে প্রাচীর নির্মাণ করলেও তা যথেচ্ছা ব্যবহার হচ্ছে না।

২০০৩ সালে ১০ মে কিশোর অপরাধীর জন্য সরকারি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২১১ স্মারকে মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতরের কাছে জায়গাটি হস্তান্তর করে। যা উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতর ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি ২৩৬/৫৬/০৫ স্মারকে দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু সেটাও বাস্তব রূপ নেয়নি।

পরবর্তীতে সরকার ২০১৩ সালের ৬ মে শেখ রাসেল ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন সেন্টার ফর দ্যা ডেস্টিটিউট চিল্ড্রেন প্রকল্প প্রণয়নের জন্য পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ প্রস্তাব চেয়ে পাঠান। সরকারের কোনো পদক্ষেপ বাস্তবে রূপ না নেয়ায় ২০১২ সালের ২২ জুলাই ৮২৮ স্মারকে সিনিয়র সহকারী কমিশনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পত্র পাঠায়।

যার জবাবে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর ৮৩৪ স্মারকে সাব-জেল চালু করার জন্য পত্র প্রেরণ করেন। অদ্যাবধি সেটাও আলোর মুখ দেখেনি। বার বার সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিলেও কোনো পদক্ষেপ অদ্যাবধি কার্যকর হয়নি। বরং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন স্মারকে চিঠি চালাচালি হয়েছে বার বার।

এদিকে উক্ত সম্পত্তি ও ভবনসহ সবকিছুই ২০০৫ সাল থেকে দেখভাল করছে উপজেলা সমাজসেবা অফিস। জেলখানার জন্য নির্মিত ৩টি কোয়ার্টার, ৪টি বড় কক্ষে বিনা ভাড়ায় স্থানীয় জজ কোর্টের কর্মচারী ও সমাজসেবা অধিদফতরের ১০/১২ জন কর্মচারী বসবাস করছে। যেখান থেকে সরকারের বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও রাজস্ব খাতে জমা হয়নি একটি টাকাও।

স্থানীয় জিয়া উদ্দীন নায়েব জানান, পাইকগাছার জেলখানাটি চালু হলে এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাগোভ হবে।

সমাজসেবা অফিসার সরদার আলী আওসান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে আমার অফিস পাইকগাছার সাব জেলখানাটি দেখাশুনার দায়িত্ব পান। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সংস্কার অযোগ্য। আমরা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখনো কোন অনুমোদন পাইনি।

পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে যোগদানের পরে শুনেছি এখানে একটি জেলখানা আছে। এটি যদি চালু করা যায় তাহলে থানা ও কোর্ট পুলিশের আসামি আনা নেয়য় ভোগান্তি কমবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, সারাদেশে উপজেলা পর্যায় মাত্র ১৮ টি কোট রয়েছে সেক্ষেত্রে পাইকগাছা-কয়রা সৌভাগ্যবান। যেহেতু পাইকগাছায় সাব-জেলাখানা আছে এটি বর্তমানে সমাজসেবা অফিস দেখভাল করছে। এটি চালুকরা গেলে এই অঞ্চালের মানুষ খুব উপকার পাবে।

পাইকগাছায় ৩৯বছরেও কাজে লাগেনি সাব-জেলখানা

আপডেট সময় : ০৯:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

খুলনায় থেকে দূরত্বের বিবেচনায় পাইকগাছা উপজেলায় ৩৯ বছর আগে সোয়া দুই একর জমির উপর নির্মাণ করা হয় সাব জেলখানা। কিন্তু সেই জেলখানা আজও আলোর মুখ দেখেনি।

তদারকির অভাবে পাইকগাছা আদালতের পাশে জেলখানার জন্য নির্মিত উচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত ভবনসহ সম্পদ-সম্পত্তি এখন অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। এখানে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিলেও ৩৯ বছরের মধ্যে কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। আয়ের বিভিন্ন খাত থাকলেও রাজস্ব খাতে জমা পড়েনি কোনো অর্থ।

সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলা সদর থেকে পাইকগাছার দূরত্ব ৬৫ কিলোমিটার এবং কয়রা সদরের দুরত্ব ১০০ কিলোমিটার দুই উপজেলার আদালত ও জেলখানার গুরুত্ব ভেবে সরকার পাইকগাছায় পাইকগাছা এবং কয়রায় আদালত স্থাপন করে। পাইকগাছায় জেলখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৮৪ সালের ২৯ মে পাইকগাছা সদরে বাতিখালী মৌজায় এর জন্য ২.২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের ১৩ বছর ধরে জেলখানার জন্য চারিদিকে প্রাচীর নির্মাণ করলেও তা যথেচ্ছা ব্যবহার হচ্ছে না।

২০০৩ সালে ১০ মে কিশোর অপরাধীর জন্য সরকারি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২১১ স্মারকে মহাপরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতরের কাছে জায়গাটি হস্তান্তর করে। যা উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতর ২০০৫ সালের ৫ জানুয়ারি ২৩৬/৫৬/০৫ স্মারকে দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু সেটাও বাস্তব রূপ নেয়নি।

পরবর্তীতে সরকার ২০১৩ সালের ৬ মে শেখ রাসেল ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন সেন্টার ফর দ্যা ডেস্টিটিউট চিল্ড্রেন প্রকল্প প্রণয়নের জন্য পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ প্রস্তাব চেয়ে পাঠান। সরকারের কোনো পদক্ষেপ বাস্তবে রূপ না নেয়ায় ২০১২ সালের ২২ জুলাই ৮২৮ স্মারকে সিনিয়র সহকারী কমিশনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পত্র পাঠায়।

যার জবাবে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর ৮৩৪ স্মারকে সাব-জেল চালু করার জন্য পত্র প্রেরণ করেন। অদ্যাবধি সেটাও আলোর মুখ দেখেনি। বার বার সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিলেও কোনো পদক্ষেপ অদ্যাবধি কার্যকর হয়নি। বরং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন স্মারকে চিঠি চালাচালি হয়েছে বার বার।

এদিকে উক্ত সম্পত্তি ও ভবনসহ সবকিছুই ২০০৫ সাল থেকে দেখভাল করছে উপজেলা সমাজসেবা অফিস। জেলখানার জন্য নির্মিত ৩টি কোয়ার্টার, ৪টি বড় কক্ষে বিনা ভাড়ায় স্থানীয় জজ কোর্টের কর্মচারী ও সমাজসেবা অধিদফতরের ১০/১২ জন কর্মচারী বসবাস করছে। যেখান থেকে সরকারের বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও রাজস্ব খাতে জমা হয়নি একটি টাকাও।

স্থানীয় জিয়া উদ্দীন নায়েব জানান, পাইকগাছার জেলখানাটি চালু হলে এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাগোভ হবে।

সমাজসেবা অফিসার সরদার আলী আওসান বলেন, ২০০৫ সাল থেকে আমার অফিস পাইকগাছার সাব জেলখানাটি দেখাশুনার দায়িত্ব পান। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সংস্কার অযোগ্য। আমরা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এখনো কোন অনুমোদন পাইনি।

পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে যোগদানের পরে শুনেছি এখানে একটি জেলখানা আছে। এটি যদি চালু করা যায় তাহলে থানা ও কোর্ট পুলিশের আসামি আনা নেয়য় ভোগান্তি কমবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, সারাদেশে উপজেলা পর্যায় মাত্র ১৮ টি কোট রয়েছে সেক্ষেত্রে পাইকগাছা-কয়রা সৌভাগ্যবান। যেহেতু পাইকগাছায় সাব-জেলাখানা আছে এটি বর্তমানে সমাজসেবা অফিস দেখভাল করছে। এটি চালুকরা গেলে এই অঞ্চালের মানুষ খুব উপকার পাবে।