শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্কে বেড়াতে আসা চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র রাজ্জাক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মমিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ১ ফেব্রুয়ারী নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের তালতলা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মমিন উপজেলার বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ি গ্রামের আস্কর আলী ওরফে হানিফ দেওয়ানীর ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০১৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেরপুর সদর উপজেলার যোগিনীমোড়া নামা পাড়ার কলেজ ছাত্র আব্দুর রাজ্জাক তার অপর তিন বন্ধু ফারুক, শামীম ও ইমন নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্কে বেড়াতে আসলে তাদের ওপর ইকোপার্ক সংলগ্ন বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ী এলাকার ছিনতাইকারীরা ঝর্ণা দেখানোর কথা বলে কৌশলে তাদের বাংলাদেশ-ভারত ১১১১ নং সীমান্ত পিলারের কাছে লাল পাহাড়ের গহীনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে কলেজ ছাত্রদের সাথে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়। এতে বাধা দিলে ছিনতাইকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় কলেজ ছাত্র আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং তার অপর তিন বন্ধু আহত হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা সোহরাব আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে আসামীরা গ্রেফতার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।
আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল অভিযুক্ত বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমান ওরফে হবি মিয়ার ছেলে নাজমুলকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড, একই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে সাজু আহমেদ ওরফে খোকন (২০) এবং আস্কর আলী ওরফে হানিফ দেওয়ানীর ছেলে মমিন (১৮) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মামলা বিচারাধীন থাকাবস্থায় আসামীরা হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক ছিল। ৮ বছর পলাতক থাকার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাজু আহম্মেদকে (৩০) গত ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সকালে গাজীপুর পৌর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১৪। এরপর বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) তালতলা বাজার এলাকা থেকে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামী মমিনকেও ৯ বছর পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নাজমুল এখনো পলাতক রয়েছে।
মমিন মিয়াকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, পলাতক মমিন তালতলা বাজার এলাকা দিয়ে নালিতাবাড়ীর দিকে আসছিল। এসময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত নাজমুলকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত আছে।