স্বামীর ঋণ খেলাপির দায়ে দুই শিশুসহ স্ত্রী গ্রেপ্তার
- আপডেট সময় : ০৮:১৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২০ বার পঠিত
সাভারের আশুলিয়ায় একটি এনজিও’র পাওনা টাকার জন্য মনির হোসেন নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় দুইশিশু সহ স্ত্রী হানিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়া থানা থেকে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আশুলিয়ার বাইদগাঁও এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হানিয়া আক্তার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের বাইদগাঁও এলাকার মনির হোসেনের স্ত্রী।
জানা যায়, ঢাকা মার্কেন্টাইল কো অপারেটিভ ব্যাংক লি: সাভার শাখা থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেন মনির হোসেন। ইতিমধ্যে ঋণের ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় বাকি প্রায় এক লাখ টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তিনি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ঋণ গ্রহীতা মনির হোসেনের স্ত্রী হানিয়া আক্তারকেও আসামি করা হয়। ওই মামলায় পুলিশ তাকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ তার স্ত্রীর সাথে তাদের দুই শিশু সন্তানকে থানায় নিয়ে আসেন। যাদের একজনের বয়স আড়াই বছর ও অন্যজনের বয়স মাত্র ১৪ মাস। তবে পুলিশ বলছেন তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হানিয়া আক্তার বলেন, “আমি জানি না, কেন তারা আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। শুধু শুনেছি আমার স্বামী নাকি কিস্তি দিতে পারে নাই। তাই তারা আমার নামে মামলা দিয়েছে। অথচ আমি কোন এনজিও থেকে টাকাই তুলিনি। তারা আমার স্বামীকে কিছু না বলে আমাকে ধরে এনেছেন।”
ঋণ গ্রহিতা গ্রেপ্তার নারীর স্বামী মনির হোসেন বলেন, “ঋণ নিয়েছি আমি, আমাকে গ্রেপ্তার না করে, তারা আমার স্ত্রী সন্তানকে থানায় নিয়ে গেছে। ছোট্ট ব্যবসা করতাম লোকসানের মুখে পড়ায় কিস্তি দিতে কিছুটা সময় নিচ্ছি।”
গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, হানিয়া বেগমের নামে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে, তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মায়ের সাথে দুই শিশুকে থানার আনার বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ছোট ছোট বাচ্চা দুটিকে মায়ের সাথে নিয়ে এসেছি যাতে সে দ্রুত জামিন পান। এটাতো অন্যায় কিছু হয়নি। তাকে এনে হাজতেও রাখা হয়নি। মুন্সির রুমে বিছানা করে রাখা হয়েছিল। কারণ বাচ্চারাতো আর অপরাধ করেনি। এছাড়া তাকে প্রিজন ভ্যানেও পাঠানো হয়নি। একটা সিএনজি ভাড়া করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড সাভার শাখার সেকেন্ড অফিসার তাপস সরকার বলেন, তার কাছে এখনো ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৫০ টাকা পাওনা রয়েছে। এই টাকা দীর্ঘ দিনেও পরিশোধ না করায় হেড অফিস থেকে দুটি মামলা করা হয়। যার একটি মামলায় ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বামী ঋণের জন্য স্ত্রীর নামে মামলা কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, তার স্ত্রী লোনের জামিনদার ছিল, তাই তার নামেও মামলা হয়েছে।