স্বাধীনতা দিবসের নামে এক বাজার থেকেই লাখ টাকা চাঁদা তুলেছেন সহকারী শিক্ষা অফিসার
- আপডেট সময় : ০৮:১৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১১৭ বার পঠিত
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর বাজার থেকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের নামে ইউএনওর কথা বলে প্রায় লাখ টাকা চাঁদা তুলেছেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন।
দিবস উদযাপন উপলক্ষে গত ২৩ মার্চ বাজারের ঔষদ, স্বর্ণ, মুদি, কাঠ ও সিমেন্টসহ বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান থেকে টোকেনে মাধ্যমে তিনি চাঁদা তুলেছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, সহকারী শিক্ষা অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কথা বলে আমাদের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে অনুদানের টোকেন দিয়ে টাকার দাবি করেন। ইউএনও স্যার পাঠিয়েছে শুনে অনিচ্ছা থাকা সত্বেও টাকা দিয়েছি। আমরা বাজারে ব্যবসা করি টাকা না দিলে পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরণের হয়রানিতে পড়তে হবে। এই প্রথম আমরা কোন দিবস উপলক্ষে এভাবে ইউএনওকে চাঁদা দিয়েছি।
গত ২৩ মার্চ সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জেল হোসেন স্বাক্ষরিত ৪৮ হাজার টাকার ৪টি টোকেনে পাওয়া যায়। টোকেনে রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী ২০ হাজার, ঔষদ ব্যবসায়ী ১৫ হাজার, স্বর্ণ ব্যবসায়ী ১০ হাজার ও একটি তেলের মিল থেকে ৩ হাজার টাকা নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া কাপড়, ঢেউ টিন, চাল ও স’মিল ব্যবসায়ীদের থেকেও চাঁদা নেয়া হয় বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী জানান, আমরা বাজারের রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা মোট ২০হাজার টাকা দিয়েছি। টাকা না দিলে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হতে হবে বলে ভয়ে এই চাঁদা দেয়া হয়েছে। আমরা তো প্রশাসনের কাছে জিম্মি। তাঁদের কথা মতো না চললে ভবিষ্যতে নানা ধরণের ঝামেলায় পড়তে হতো।
কৃষ্ণপুর বাজারের এক কাঠ ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে ব্যবসার অবস্থা ভালো না। সামনে ঈদ। এই সময় ইউএনও’র স্বাধীনতা দিবসের চাঁদা নেয়ার ব্যাপারটা আমাদের কাছে অসহনীয় ছিল। বাজারের কাঠ ও স’মিল ব্যবসায়ীদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করা হয়েছিল। পরে আমর সবাই মিলে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা তুলে দেই। এই প্রথম আমাদের কাছে থেকে টাকা নেয়া হলো। আগে কোন দিন শুনিও নাই যে, এই অনুষ্ঠানের জন্য এভাবে চাঁদা নেয়া হয়।
এ ব্যপারে অভিযুুক্ত উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি ইউএনও স্যারের নির্দেশে চাঁদা তুলেছি। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের আর কিছু বলবো না। যা বলার ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন বলে তিনি অফিস থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান।
উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরদ আলী বলেন, আমরা কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করি নাই। কোন ব্যবসায়ীর কাছে থেকে কেউ জোর কোরে চাঁদা আদায় করলে আপনাদের কাছে না বলে আমার কাছে বলার কথা। টাকা তোলা হয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৬ মার্চ অনুষ্ঠান উপলক্ষে তারা সেচ্ছায় অনুদান দিয়ে থাকে। আমরা কাউকে প্রেসার দিয়ে টাকা নেই না।