সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলায় ইমামকে লাঞ্ছিত,করা হলো চাকরিচুত্য
- আপডেট সময় : ১০:৪৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০২৩ ১০৯ বার পঠিত
সাভারের আশুলিয়ায় পবিত্র শবেবরাতের রাতে মসজিদে সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে ওয়াজ করায় ইমামকে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ কর্মী। অতঃপর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে এলাকা থেকেও তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বলিভদ্র বাজারের পাশে তালপট্টি এলাকার বায়তুল আকসা মসজিদের ইমাম মুফতি জুনায়েদ হাবিব শবেবরাত উপলক্ষে বয়ান করতে ছিলেন। এ সময় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলায় ক্ষুব্ধ হয়ে তার ওপর হামলা করতে আসেন ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মণ্ডলের ভাই আক্কাস আলী মণ্ডল। তিনি নিজেও আওয়ামী লীগের কর্মী এবং সেই মসজিদের উপদেষ্টা।
আক্কাস আলী মন্ডল বলিভদ্র এলাকায় চাঁদাবাজি ও তালপট্টি এলাকায় জুয়ার আসর পরিচালনার মূল হোতা। তার নেতৃত্বে প্রায় প্রতিদিনই বসে জুয়ার আসর। এলাকাজুড়ে বিস্তৃত রয়েছে তার সুদের ব্যবসা। তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎসহ একাধিক মামলাও রয়েছে। শুনা যায় তার ভাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয় না। তাই তারা দলের প্রভাব খাঁটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার বিরুদ্ধে কথা বলার সহাস কারো নাই। সবাই তাদের কাছে জিম্মি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইমাম মুফতি জুনায়েদ হাবিব বলেন, গত মঙ্গলবার শবেবরাতের রাতে আমি মসজিদে বয়ান করছিলাম। বয়ানের সময় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলায় আক্কাস আলী মণ্ডল বয়ান বন্ধ করতে বলেন। বয়ান বন্ধ করতেই উনি তেড়ে আসেন আমার দিকে। আমাকে গালাগাল করেন। এতে মুসল্লিরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গণধোলাই দিতে উদ্যত হয়। পরে পরিস্থিতি খারাপ দেখে আমি আক্কাস মন্ডলকে জড়িয়ে ধরে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করি। বিষয়টি নিয়ে সবাইকে আর বাড়াবাড়ি না করতেও অনুরোধ করি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উনি চলে যান।
চাকরি হতে অব্যহতির বিষয়ে তিনি বলেন, সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করায় আজ আমাকে চাকরি হারাতে হলো। আমি এই মসজিদে ৮ বছর ধরে ইমামতি করছি অথেচো আমাকে এক দিনের সময়ও দেওয়া হলো না। চাকরি না থাকায় হয়তো পরিবার নিয়ে কিছুদিন কষ্টে কাটাতে হবে। ইসলামের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আজ আমি লাঞ্ছিত হয়েছি। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এ অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না। আজ সত্য কথা বলায় আমার চাকরি হারাতে হলো।
এ বিষয়ে জানতে আক্কাস আলী মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘হুম, আমি ইমামকে লাঞ্ছিত করছি, তাতে কি হয়েছে। আপনি যা পারেন করেন গিয়া। বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভালো হবে না।’
আশুলিয়ার থানার ওসি (অপারেশন) জামাল শিকদার বলেন, এখনো কেউ এধরনের অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।