ঢাকা ০২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কার সাতক্ষীরা উপকূলে বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচী পালিত বালিয়াকান্দিতে এ্যাসেডের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী পালিত ভোলা প্রেসক্লাবে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মত বিনিময়  আত্রাইয়ে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম

সাপে কেটে মৃত্যু, জীবিত করতে দিনভর ঝাড়ফুঁক

মো: আলা আমিন, জামালপুর :
  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০১ বার পঠিত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সাপে কেটে সানোয়ার হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাকে জীবিত করতে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থলগ্রামে ঝাড়ফুঁক করছিলেন বাহার মিয়া নামে এক কবিরাজ। সানোয়ার উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের আদ্রা এলাকার আবুল কালামের ছেলে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে দিনগত রাতে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, আদ্রা এলাকার আবুল কালাম দুই বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সাজেদা বেগম দুই পুত্র সন্তান নিয়ে আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামে বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই ছেলে সাগর (১৭) ও সানোয়ার (১৪) বাড়ির পাশে স্থল পূর্বপাড়া বিলে ধান ক্ষেতে টর্চ লাইট দিয়ে মাছ ধরছিলেন। এ সময় সানোয়ারের ডান পায়ে বিষাক্ত সাপ দংশন করে। পরে রাতেই সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সানোয়ারের আওনা ইউনিয়নের স্থলে ফিরিয়ে এনে স্বজনরা দাফন কাফন করতে গেলে সাতপোয়া এলাকার ওঝা রহমান পাগলার ছেলে বাহার মিয়া ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে বাঁচিয়ে তোলার আশ্বাস দেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক চলতে থাকায় তার দাফন করা সম্ভব হয়নি।

নিহতের মা সাজেদা বেগম বলেন, হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলছে তার ছেলে মারা গেছে। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে কবিরাজ ঝাড়ফুঁক করছেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী অনেকে আলোচনা সমালোচনা করছেন। তবুও মায়ের মন যদি ছেলে জীবিত হয় এই আশাতেই ঝাড়ফুঁক দেওয়াচ্ছি।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রবিউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, জীবিতাবস্থায় গতকাল রাতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। পরে তাকে রেফার করা হলে হাসপাতালে না নিয়ে স্বজনরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আবারও সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সে মৃত্যুবরণ করে।

কবিরাজী চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেডিকেল সাইন্সে ঝাড়ফুঁকের কোন স্থান নেই। এগুলো কুসংস্কার। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে ভ্যাকসিনেশন।

এ বিষয়ে সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে তিনি জানেন না। কেউ তাকে জানায়নি।

আওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন মুঠোফোনে , মৃত্যুর বিষয়ে লোকমুখে শুনেছি।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর মুঠোফোনে বলেন, সাপে কেটে একজনের মৃত্যু হয়েছে এটা শুনেছি। কিন্তু ঝাড়ফুঁকের কথা শুনিনি।

সাপে কেটে মৃত্যু, জীবিত করতে দিনভর ঝাড়ফুঁক

আপডেট সময় : ০৯:০৫:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সাপে কেটে সানোয়ার হোসেন (১৪) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। তবে তাকে জীবিত করতে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থলগ্রামে ঝাড়ফুঁক করছিলেন বাহার মিয়া নামে এক কবিরাজ। সানোয়ার উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের আদ্রা এলাকার আবুল কালামের ছেলে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে দিনগত রাতে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, আদ্রা এলাকার আবুল কালাম দুই বিয়ে করেছেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সাজেদা বেগম দুই পুত্র সন্তান নিয়ে আওনা ইউনিয়নের স্থল গ্রামে বসবাস করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই ছেলে সাগর (১৭) ও সানোয়ার (১৪) বাড়ির পাশে স্থল পূর্বপাড়া বিলে ধান ক্ষেতে টর্চ লাইট দিয়ে মাছ ধরছিলেন। এ সময় সানোয়ারের ডান পায়ে বিষাক্ত সাপ দংশন করে। পরে রাতেই সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে সানোয়ারের আওনা ইউনিয়নের স্থলে ফিরিয়ে এনে স্বজনরা দাফন কাফন করতে গেলে সাতপোয়া এলাকার ওঝা রহমান পাগলার ছেলে বাহার মিয়া ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে বাঁচিয়ে তোলার আশ্বাস দেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক চলতে থাকায় তার দাফন করা সম্ভব হয়নি।

নিহতের মা সাজেদা বেগম বলেন, হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলছে তার ছেলে মারা গেছে। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে কবিরাজ ঝাড়ফুঁক করছেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী অনেকে আলোচনা সমালোচনা করছেন। তবুও মায়ের মন যদি ছেলে জীবিত হয় এই আশাতেই ঝাড়ফুঁক দেওয়াচ্ছি।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রবিউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, জীবিতাবস্থায় গতকাল রাতে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। পরে তাকে রেফার করা হলে হাসপাতালে না নিয়ে স্বজনরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আবারও সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সে মৃত্যুবরণ করে।

কবিরাজী চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেডিকেল সাইন্সে ঝাড়ফুঁকের কোন স্থান নেই। এগুলো কুসংস্কার। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে ভ্যাকসিনেশন।

এ বিষয়ে সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে তিনি জানেন না। কেউ তাকে জানায়নি।

আওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন মুঠোফোনে , মৃত্যুর বিষয়ে লোকমুখে শুনেছি।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর মুঠোফোনে বলেন, সাপে কেটে একজনের মৃত্যু হয়েছে এটা শুনেছি। কিন্তু ঝাড়ফুঁকের কথা শুনিনি।