শেরপুরে নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণ, পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হযরত আলীসহ সত্তর জনের নামে শেরপুর সদর থানায় মামলা করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় হযরত আলীসহ ৭ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের হরিণধরা বাজার থেকে তাদের আটক করার সময় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের অভিযোগ ওই সময় বিএনপি কর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ করে এবং হামলা করে। এতে চার পুলিশ আহত হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শেরপুর জেলা বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হযরত আলী, শেরপুর জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, বলাইরচর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাবেক আহ্বায়ক মোঃ বাদল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আতাউর রহমান, চরপক্ষ্মীমারি ইউনিয়ন সদস্য সচিব মোঃ জীবন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মন্জু মিয়া।
পুলিশ জানায়, শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে চলমান নির্বাচনে জনগনকে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে নেতা-কর্মী নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ ও নাশকতার পরিকল্পনা করছে, এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী বিএনপি নেতা হযরত আলীকে আটক করা হয়। এসময় উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এতে ৪ জন পুলিশ আহত হয়। পরে পুলিশ আত্মরক্ষায় পাল্টা ১৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহর বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মামুনুর রশিদ পলাশ বলেন, আমরা আগামী নির্বাচনে জনগণ যেন ভোট না দেয় সেই প্রচারণার জন্য লিফলেট বিতরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তার আগেই রাস্তায় আমাদের নেতা সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীসহ আট জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ককটেল বিস্ফোরণ তো দূরের কথা আমাদের হাতে লিফলেট ছাড়া কোন কিছুই ছিলো না। আর এই দুর্দিনে আমরা ককটেল কোথায় পাবো? আমাদের মূল কাজ হচ্ছে সাধারন মানুষকে বুঝিয়ে নির্বাচন বিমুখ করা। তবে বিনা কারণে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে পুলিশ সাধারণ জনগনকে লক্ষ করে গুলি ছুড়ে।
এ ব্যাপারে শেরপুর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম পিপিএম জানান, বিএনপির নেতা কর্মীরা নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণের সময় নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। এমন খবর আমরা পাওয়ার সাথে সাথেই পুলিশি অভিযান চালায়। তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের উপর ককটেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়ে। এসময় ৭জনকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক জানান, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে আমরা অভিযান চালালে বিএনপি নেতা-কর্মীরা আমাদের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে ১৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৩ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। এসময় ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় ৭ জনকে। এ ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০ জনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে মোট ৭০ জনের নামে শেরপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।