আজ আর স্বপ্ন নয়, স্বপ্নের বাস্তবায়ন, বুকভরা আনন্দ আর বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস!
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশ তেরশত নদীর দেশ। এদেশের বুকে বয়ে গেছে অসংখ্য নদন। তেমনিভাবে কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী নগরী কুমারখালীর দক্ষিণ পার্শ্বের কোল ঘেষে বয়ে গেছে গড়াই নদী। যার ফলে কুমারখালীর উত্তর-দক্ষিণ দুই পাড়ের মানুষের রয়েছে নদী কেন্দ্রিক বিভাজন। তাই যাতায়াত ব্যবস্থায় প্রতিনিয়তই নৌকার (খেয়া পার) আশ্রয় নিতে হয়। যে কারণে প্রতিনিয়তই অসহনীয় ঝামেলা আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজারো জনতার। সেই থেকে শত বছরের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা গড়াই নদীর ওপর যদুবয়রা-কুমারখালী সেতু নির্মাণের।
কুমারখালীর ইতিহাসে সত্যিই আজ গৌরবের দিন। সেই স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। গড়াইয়ের বুকে নির্মিত হয়েছে সুদৃশ্য স্বপ্নের যদুবয়রা-কুমারখালী শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু। তাইতো আজ লাখো জনতার মনে বুকভরা আনন্দ আর বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস!
ঈদ-উল-আযহা সামনে রেখে জনদুর্ভোগ ও উৎসুক জনতার কথা চিন্তা করে ২৮ জুন ২০২৩ খ্রি: তারিখ বেলা ১১টার দিকে উপ-আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ (৭৮- কুষ্টিয়া -৪)। এসময় উপস্থিত ছিলেন কুমারখালী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ সামছুজ্জামান অরুন প্রমুখ।এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণ সম্পূর্ণ টোলমুক্তভাবে এ সেতুতে চলাচল করতে পারবেন।
কুমারখালী বাসীর শত বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা'র প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন কুমারখালী বাসী। পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সামিউর রহমান সুমন মিঞা বলেন, আজ আমাদের আরেকটা ঈদ। জননেত্রী শেখ হাসিনার ব্যপক উন্নয়নের ধারাবাহিকতারই একটি উদাহরণ কুমারখালীর শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু। তিনি আরো বলেন কুমারখালীর দক্ষিণাঞ্চলীয় পাঁচটি ইউনিয়নের মানুষের সবথেকে বেশি উপকার হলো এই সেতু হওয়াতে।
উল্লেখ্য নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও রানা বিল্ডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ করছে। নির্ভরযোগ্য সুত্রমতে সেতুটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৮৯,৯১,৩৫,৫৯১/- (৮৯ কোটি ৯১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫ শত ৯১ টাকা )। সেতুটিতে মোট পিলার রয়েছে ১২টি, এবাটমেন্ট রয়েছে ২টি, মোট পাইল আছে ১১২টি, পিসি গার্ডার আছে ৫২টি এবং স্প্যানের সংখ্যা ১৩টি। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার। সংযোগ সড়ক দুই প্রান্তে ৮০০ মিটার।
মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৭ এপ্রিল ২০১৯ খ্রি:।
এই সেতু শুধু মাত্র একটি সেতু নয় এটা আমাদের অহংকার । এই সেতু কুমারখালীর দক্ষিণাঞ্চলের সাথে অবাধ সংযােগ ঘটাবে।
কুমারখালীর মানুষের আশা-স্বপ্ন এবং নতুন জীবনযাত্রা শুরু হবে এই সেতুর মধ্য দিয়ে। এই সেতু বদলে দেবে এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনীতি। উন্নত হবে ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচার, জীবনযাত্রা।
যদুবয়রা-কুমারখালী সেতু এ জনপদের মানুষের একটি স্বপ্নের নাম। এই সেতুর ফলে কুমারখালীতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে সুধীমহল মনে করেন। সর্বোপরি শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে।