ঢাকা ১১:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দেবহাটায় মাছের পাশাপাশি ভেঁড়িতে অসময়ে তরমুজ চাষে স্বাবলম্বী গোলাম রব্বানী তথ্যমেলায় মুজিববর্ষের লিফলেট ও শেখ হাসিনার বাণী প্রচার: আগামীকাল খানসামায় আসছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বালিয়াকান্দিতে উপজেলা পর্যায়ে অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন পাইকগাছায় বিপুল পরিমাণ পলিথিন ব্যাগ ও কারেন্ট জাল জব্দ পাইকগাছার গদাইপুরে গনশুনানী অনুষ্ঠিত জনগণের আস্থা পেলে ধানের শীষের জয় সুনিশ্চিত: ডাঃ এ জেড এম জাহিদ টঙ্গি ইজতেমা হামলার প্রতিবাদে হিলিতে সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ৩১দফা অবহিতকরণে আত্রাইয়ে সাহাগোলা ইউনিয়ন বিএনপি’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত চারঘাটে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি ইসরাইল, সম্পাদক সুজন

রাজবাড়ীতে বিস্ফোরন মামলার আসামীর স্বীকারোক্তিতে উঠে আসলে ব্ল্যাক সোহেল ও রাসেলের নাম

স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট সময় : ০৩:১০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩০ বার পঠিত

রাজবাড়ী জেলা সদরের খানগঞ্জ ইউনিয়নের বেলগাছি হরিহরপুর এলাকায় গত আগস্ট মাসের ২০ তারিখে ককটেল বোমা বিস্ফোরনে প্রতিবন্ধি এক বালকের হাতের কব্জি উড়ে যাওয়ার ঘটনায় সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। পরবর্তীতে এই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তের নির্দেশ দেয় কোর্ট।

উক্ত মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামী বেলগাছি হরিহরপুর গ্রামের মৃত সাত্তার সরদারের ছেলে বাবু সরদার ওরফে গেদা’কে আদালতে সোপর্দ করার সময় কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এরই পেক্ষিতে মামলাটি তদন্তের সময়ে আসামী ও বিশস্ত গুপ্তচরের গোপন সুত্রে জানা যায়, খানগন্জ ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি সোহেল ও কাজীহাট এলাকায় রাসেলের নাম জড়িত থাকার কথা স্বীকার আসামি বাবু ওরফে গেদা। এদিকে ককটেল বিস্ফোরনের আগের দিন ১৯ আগস্ট ২০২৩ বিকাল ৩/৪ টার সময় সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল তার লোক রাসেল একটি ককটেল বোমা’র ব্যাগ বাবু সরদারের বাড়িতে তার স্ত্রীর কাছে দিয়ে বলে ভাবি ব্যাগটি রাখেন।

ব্যাগে যন্ত্রপাতি ও জিনিস আছে, ব্যাগটি খুইলেন না।পরে আমি আর সোহেল ভাই এসে নিয়ে যাবো।এসময় বাবুর স্ত্রী তাদের বসত ঘরের চাউলের মধ্যে রেখে দেয় ব্যাগটি।পরে বাবু ওরফে গেদা সরদার বাড়িতে আসলে তার স্ত্রী তাকে ব্যাগের কথা বল্লে সে ব্যাগটি না খোলার জন্য তার স্ত্রীকে বলে।পরে ব্যাগটি সোহেল ও রাসেল এসে নিয়ে যাবে বলে তার স্ত্রীকে।
পরের দিন সকালে অর্থাৎ ২০ আগস্ট ঘটনার দিন খাওয়া দাওয়া শেষে,বাবু অটো স্ট্যান্ডে চলে যায় এবং তার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজে চলে যায়।এরই মধ্যে হরিহরপুর গ্রামের মো. হালিম শেখের ছেলে বাক শ্রবন প্রতিবন্ধি,মো. সুমন বাবুর বাড়িতে কেউ না থাকায় সেখানে গীয়ে কোন কিছু খুজে না পেয়ে চাউলের মধ্যে থাকা ব্যাগ থেকে দুটি কস্টেপ পেচানে বোমা নিয়ে বেলগাছি রেল স্টেশনের দিকে হাটতে থাকে।

এসময় ককটেল বোমা থেকে পেচানো কসটেপ খুলতে গেলে ককটেলটি বিস্ফোরন হয়।এসময় বিকট আওয়াজ হয় এবং আশে পাশের লোকজন ঘটনা স্থলে আসে।বিস্ফোরনে প্রতিবন্ধ সুমনের বাম হাতের কব্জি,হাতের পাতা ও আঙ্গুল প্রচন্ড যখম হয়। বিষ্ফেরিত বোমার স্পিলিন্টারে তার বাম বাহু ও পেটের বাম পাশে আঘাত লাগে ও যখম হয়।তখন প্রতিবন্ধি সুমন এ অবস্থায় বাবু ওরফে গেদা সরদারের বাড়িতে এসে কাদতে থাকে।রাসেল সংবাদ পেয়ে সুমনকে নিয়ে অটো স্ট্যান্ডে আসে,বাবু বাড়িতে গীয়ে সুমনকে না পেয়ে স্ট্যান্ডের কাছে সুমনের মাকে নিয়ে আসে।পরে রাসেলের কাছ থেকে সুমনকে নিয় অটো যোগে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। এদিকে একই দিন সোহেল ও রাসেল বাবুর বাড়িতে ব্যাগ নিতে আসে।বাবুর স্ত্রীকে ব্যাগটি দিতে বলে।ব্যগ খুলে দেখে ব্যাগের মধ্যে জিনিস (বোমা) নাই।

এসময় বাবুর স্ত্রী সালমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে,আপনি যেভাবে ব্যাগ রাখছে, সেই ভাবেই দিলাম।ব্যাগতো কেউ খুলে নাই।তখন সোহেল ও রাসেল বলে যা হওয়া হইছে।এই ঘটনা কারে কাছে বলবিনা, নইলে তোর আর তোর স্বামীকে মাইরা ফালামু বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।

এরই মধ্যে সন্দেহের তালিকায় অস্ত্র মামলার ঘটনায় জড়িত থাকা গত ৯ সেপ্টেম্বর হরিহরপুর এলাকার বেলগাছি রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশ থেকে বাবু ওরফে গেদাকে গ্রপ্তার করে পুলিশ।

পরে ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বাবুকে কোর্টে পাঠানো হয়।তদন্তে গ্রেপ্তারকৃত আসামী বাবু ওরফে গেদাকে জিজ্ঞাসাবাদে হরিহরপুর গ্রামের ইব্রাহিম ল্যাংরার ছেলে অস্ত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল ও কাজির হাট এলাকার রাসেলের নাম স্বীকার করে।

সোহেল ও রাসেল তারা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সহায়তায় যেকোন স্থানে নাশকতামূকল কর্মকান্ড ও বিস্ফোরন ঘটানোর জন্য অজ্ঞাত স্থানে সরবরাহ করার চেস্টা করছিলে বলে জানায়।

আসামীরা পরষ্পর যোগসাজসে ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনে ( সং/২০০২) এর ৩/৬ ধারায় অপরাধী হিসেবে গন্য করা হয়।আসামী বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সোহেল, রাসেল ও অজ্ঞাতদের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যায়।তাই মামলার স্বার্থে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন বলে মনে করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার সাব ইন্সপেক্টর বিমল চন্দ্র বর্মন জানান, মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জামিন বা মঞ্জুর করে জেল হাজতে রাখার অনুরোধ জানিয়েছে। সেই সাথে আসামীর স্বীকারোক্তিতে যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে।

ট্যাগস :

রাজবাড়ীতে বিস্ফোরন মামলার আসামীর স্বীকারোক্তিতে উঠে আসলে ব্ল্যাক সোহেল ও রাসেলের নাম

আপডেট সময় : ০৩:১০:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজবাড়ী জেলা সদরের খানগঞ্জ ইউনিয়নের বেলগাছি হরিহরপুর এলাকায় গত আগস্ট মাসের ২০ তারিখে ককটেল বোমা বিস্ফোরনে প্রতিবন্ধি এক বালকের হাতের কব্জি উড়ে যাওয়ার ঘটনায় সদর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। পরবর্তীতে এই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তের নির্দেশ দেয় কোর্ট।

উক্ত মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামী বেলগাছি হরিহরপুর গ্রামের মৃত সাত্তার সরদারের ছেলে বাবু সরদার ওরফে গেদা’কে আদালতে সোপর্দ করার সময় কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এরই পেক্ষিতে মামলাটি তদন্তের সময়ে আসামী ও বিশস্ত গুপ্তচরের গোপন সুত্রে জানা যায়, খানগন্জ ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি সোহেল ও কাজীহাট এলাকায় রাসেলের নাম জড়িত থাকার কথা স্বীকার আসামি বাবু ওরফে গেদা। এদিকে ককটেল বিস্ফোরনের আগের দিন ১৯ আগস্ট ২০২৩ বিকাল ৩/৪ টার সময় সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল তার লোক রাসেল একটি ককটেল বোমা’র ব্যাগ বাবু সরদারের বাড়িতে তার স্ত্রীর কাছে দিয়ে বলে ভাবি ব্যাগটি রাখেন।

ব্যাগে যন্ত্রপাতি ও জিনিস আছে, ব্যাগটি খুইলেন না।পরে আমি আর সোহেল ভাই এসে নিয়ে যাবো।এসময় বাবুর স্ত্রী তাদের বসত ঘরের চাউলের মধ্যে রেখে দেয় ব্যাগটি।পরে বাবু ওরফে গেদা সরদার বাড়িতে আসলে তার স্ত্রী তাকে ব্যাগের কথা বল্লে সে ব্যাগটি না খোলার জন্য তার স্ত্রীকে বলে।পরে ব্যাগটি সোহেল ও রাসেল এসে নিয়ে যাবে বলে তার স্ত্রীকে।
পরের দিন সকালে অর্থাৎ ২০ আগস্ট ঘটনার দিন খাওয়া দাওয়া শেষে,বাবু অটো স্ট্যান্ডে চলে যায় এবং তার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজে চলে যায়।এরই মধ্যে হরিহরপুর গ্রামের মো. হালিম শেখের ছেলে বাক শ্রবন প্রতিবন্ধি,মো. সুমন বাবুর বাড়িতে কেউ না থাকায় সেখানে গীয়ে কোন কিছু খুজে না পেয়ে চাউলের মধ্যে থাকা ব্যাগ থেকে দুটি কস্টেপ পেচানে বোমা নিয়ে বেলগাছি রেল স্টেশনের দিকে হাটতে থাকে।

এসময় ককটেল বোমা থেকে পেচানো কসটেপ খুলতে গেলে ককটেলটি বিস্ফোরন হয়।এসময় বিকট আওয়াজ হয় এবং আশে পাশের লোকজন ঘটনা স্থলে আসে।বিস্ফোরনে প্রতিবন্ধ সুমনের বাম হাতের কব্জি,হাতের পাতা ও আঙ্গুল প্রচন্ড যখম হয়। বিষ্ফেরিত বোমার স্পিলিন্টারে তার বাম বাহু ও পেটের বাম পাশে আঘাত লাগে ও যখম হয়।তখন প্রতিবন্ধি সুমন এ অবস্থায় বাবু ওরফে গেদা সরদারের বাড়িতে এসে কাদতে থাকে।রাসেল সংবাদ পেয়ে সুমনকে নিয়ে অটো স্ট্যান্ডে আসে,বাবু বাড়িতে গীয়ে সুমনকে না পেয়ে স্ট্যান্ডের কাছে সুমনের মাকে নিয়ে আসে।পরে রাসেলের কাছ থেকে সুমনকে নিয় অটো যোগে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। এদিকে একই দিন সোহেল ও রাসেল বাবুর বাড়িতে ব্যাগ নিতে আসে।বাবুর স্ত্রীকে ব্যাগটি দিতে বলে।ব্যগ খুলে দেখে ব্যাগের মধ্যে জিনিস (বোমা) নাই।

এসময় বাবুর স্ত্রী সালমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে,আপনি যেভাবে ব্যাগ রাখছে, সেই ভাবেই দিলাম।ব্যাগতো কেউ খুলে নাই।তখন সোহেল ও রাসেল বলে যা হওয়া হইছে।এই ঘটনা কারে কাছে বলবিনা, নইলে তোর আর তোর স্বামীকে মাইরা ফালামু বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।

এরই মধ্যে সন্দেহের তালিকায় অস্ত্র মামলার ঘটনায় জড়িত থাকা গত ৯ সেপ্টেম্বর হরিহরপুর এলাকার বেলগাছি রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশ থেকে বাবু ওরফে গেদাকে গ্রপ্তার করে পুলিশ।

পরে ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বাবুকে কোর্টে পাঠানো হয়।তদন্তে গ্রেপ্তারকৃত আসামী বাবু ওরফে গেদাকে জিজ্ঞাসাবাদে হরিহরপুর গ্রামের ইব্রাহিম ল্যাংরার ছেলে অস্ত্র মামলার ঘটনার সাথে জড়িত সোহেল ওরফে ব্ল্যাক সোহেল ও কাজির হাট এলাকার রাসেলের নাম স্বীকার করে।

সোহেল ও রাসেল তারা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের সহায়তায় যেকোন স্থানে নাশকতামূকল কর্মকান্ড ও বিস্ফোরন ঘটানোর জন্য অজ্ঞাত স্থানে সরবরাহ করার চেস্টা করছিলে বলে জানায়।

আসামীরা পরষ্পর যোগসাজসে ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনে ( সং/২০০২) এর ৩/৬ ধারায় অপরাধী হিসেবে গন্য করা হয়।আসামী বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সোহেল, রাসেল ও অজ্ঞাতদের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যায়।তাই মামলার স্বার্থে তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জেল হাজতে আটক রাখা প্রয়োজন বলে মনে করা হয়।

জেলা গোয়েন্দা শাখার সাব ইন্সপেক্টর বিমল চন্দ্র বর্মন জানান, মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জামিন বা মঞ্জুর করে জেল হাজতে রাখার অনুরোধ জানিয়েছে। সেই সাথে আসামীর স্বীকারোক্তিতে যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে।