ঢাকা ১০:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

ভোলার তরমুজে নেই ক্রেতা, লোকসানে চাষীরা

আশিকুর রহমান শান্-ভোলা:
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪ ৮৭২ বার পঠিত

ভোলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের ফলন ভালো হলেও পবিত্র রমজান শুরু হতেই অতি লাভের আশায় বাজারে আসতে থাকে অপরিপক্ক মৌসুমি এ তরমুজ ।
এ ফলনের প্রতি কমবেশি চাহিদা থাকায় প্রথম দিকে ব্যবসায়ীরা আকাশচুম্বী দর হাকালেও বেশী দরে অনিহা দেখা দেয় ক্রেতাদের মধ্যে। অপরদিকে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমতে থাকে রসালো এ তরমুজের। দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছে চাষীরা।

কোনো কোনো চাষী জমি থেকে তরমুজ উত্তোলন করে ক্রেতার অভাবে জমিতেই ফেলে রাখছেন। তরমুজ পেকে গেলেও অনেক চাষী জমি থেকে তা উত্তোলনই করছেনা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৫ হাজার হেক্টরে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ লাখ ৬২ হাজার টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টন। গত বছর তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর, যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৮ টন।

সরজমিনে দেখা যায়, জেলার মোট উৎপাদিত তরমুজের প্রায় ৯০ ভাগই আসে চরফ্যাশন উপজেলা থেকে। প্রতি বছরের মতো চলতি মৌসুমেও চরফ্যাশনে তরমুজের প্রচুর আবাদ হয়েছে। সেখানকার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে নুরাবাদ, মজিবনগর, চরকলমী, আহম্মদপুর, নীলকমল, আবুবক্করপুর, রসুলপুরসহ আটটি ইউনিয়নে তরমুজের আবাদ হয়েছে বেশি। 

উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের তরমুজচাষী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার তরমুজও বিক্রি করতে পারিনি।’

ঢাকার কাওরান বাজার থেকে তরমুজ ক্রয় করতে আসা অধিকাংশ পাইকাররা সুলভমূল্যে তরমুজ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকায়। জহিরুল ইসলাম নামের এক পাইকারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, চাষীদের কাছ থেকে পুরো ক্ষেতে তরমুজ ক্রয় করে তা ট্রাকে ঢাকার আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন। তাতে করে ১০-১২ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম পড়ছে ৮০-১২০ টাকা। যদিও গেল বছর এই তরমুজ তাদের ক্রয় করতে হয়েছে ২০০-২৫০ টাকায়। এ বছর ভোলার অধিকাংশ চাষীরাই তরমুজ আবাদে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, ‘এবার ভোলায় প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৫২ টন। এখানকার তরমুজ সারা দেশে জনপ্রিয়। এখান থেকে ফেরি, লঞ্চ ও ট্রলারে করে বিপুল পরিমাণ তরমুজ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এ বছরের শুরুর দিকে চাষীরা তরমুজের দাম ভালো পেয়েছেন। তবে মাঝামাঝি সময়ের দিকে হঠাৎ করে ক্রেতা না থাকায় বাজার দর কমে গিয়ে কোনো কোনো চাষী বিপাকেই পড়েছেন। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই বাজার দাম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা তাদের।

ট্যাগস :

ভোলার তরমুজে নেই ক্রেতা, লোকসানে চাষীরা

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

ভোলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের ফলন ভালো হলেও পবিত্র রমজান শুরু হতেই অতি লাভের আশায় বাজারে আসতে থাকে অপরিপক্ক মৌসুমি এ তরমুজ ।
এ ফলনের প্রতি কমবেশি চাহিদা থাকায় প্রথম দিকে ব্যবসায়ীরা আকাশচুম্বী দর হাকালেও বেশী দরে অনিহা দেখা দেয় ক্রেতাদের মধ্যে। অপরদিকে বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমতে থাকে রসালো এ তরমুজের। দাম কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছে চাষীরা।

কোনো কোনো চাষী জমি থেকে তরমুজ উত্তোলন করে ক্রেতার অভাবে জমিতেই ফেলে রাখছেন। তরমুজ পেকে গেলেও অনেক চাষী জমি থেকে তা উত্তোলনই করছেনা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৫ হাজার হেক্টরে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ লাখ ৬২ হাজার টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টন। গত বছর তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর, যা থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৮ টন।

সরজমিনে দেখা যায়, জেলার মোট উৎপাদিত তরমুজের প্রায় ৯০ ভাগই আসে চরফ্যাশন উপজেলা থেকে। প্রতি বছরের মতো চলতি মৌসুমেও চরফ্যাশনে তরমুজের প্রচুর আবাদ হয়েছে। সেখানকার ২১টি ইউনিয়নের মধ্যে নুরাবাদ, মজিবনগর, চরকলমী, আহম্মদপুর, নীলকমল, আবুবক্করপুর, রসুলপুরসহ আটটি ইউনিয়নে তরমুজের আবাদ হয়েছে বেশি। 

উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের তরমুজচাষী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার তরমুজও বিক্রি করতে পারিনি।’

ঢাকার কাওরান বাজার থেকে তরমুজ ক্রয় করতে আসা অধিকাংশ পাইকাররা সুলভমূল্যে তরমুজ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকায়। জহিরুল ইসলাম নামের এক পাইকারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, চাষীদের কাছ থেকে পুরো ক্ষেতে তরমুজ ক্রয় করে তা ট্রাকে ঢাকার আড়তে নিয়ে বিক্রি করেন। তাতে করে ১০-১২ কেজি ওজনের একটি তরমুজের দাম পড়ছে ৮০-১২০ টাকা। যদিও গেল বছর এই তরমুজ তাদের ক্রয় করতে হয়েছে ২০০-২৫০ টাকায়। এ বছর ভোলার অধিকাংশ চাষীরাই তরমুজ আবাদে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, ‘এবার ভোলায় প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ৫২ টন। এখানকার তরমুজ সারা দেশে জনপ্রিয়। এখান থেকে ফেরি, লঞ্চ ও ট্রলারে করে বিপুল পরিমাণ তরমুজ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এ বছরের শুরুর দিকে চাষীরা তরমুজের দাম ভালো পেয়েছেন। তবে মাঝামাঝি সময়ের দিকে হঠাৎ করে ক্রেতা না থাকায় বাজার দর কমে গিয়ে কোনো কোনো চাষী বিপাকেই পড়েছেন। তবে কয়েক দিনের মধ্যেই বাজার দাম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা তাদের।