বাংলাদেশের রানী খ্যাত নদীবেষ্ঠিত উপকূলীয় জনপদ ভোলা জেলার সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশার ৩ কিঃ মিঃ জুড়ে মেঘনা নদীর তীরবর্তী বেড়ীবাঁধে বজ্রপাতের ঝুঁকি রোধে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন শাখা তালের বীজ রোপন করে।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টা থেকে শুরু করে অর্ধ সকাল ব্যাপী ১ নং ও ৪নং ওয়ার্ডের মেঘনা নদীর তীরবর্তী কালুপুর সোনাডগী গ্রামের বেড়ীবাঁধের পাশে ৩ কিঃ মিঃ রাস্তা জুড়ে প্রায় ৩ শতাধিক তালবীজ রোপন করে।
প্রসংগত, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে উষ্ণতা বাড়ছে। পৃথিবী উষ্ণায়নের ফলে প্রতিনিয়ত কঠিন হয়ে পড়ছে মানুষের বসবাস। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় পৃথিবী ব্যাপী নানান পদক্ষেপ লক্ষণীয়। ঝুঁকি মোকাবেলায় পরিবেশবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞগণ বৃক্ষরোপনের উপর বেশী তাগিদ দিচ্ছেন। অন্যদিকে বজ্রপাতের ফলে প্রাণহানির ঘটনা হু হু করে বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে বৃক্ষরোপনে বিশেষ করে তালগাছ লাগানোর উপর জোর দিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে তালবীজ রোপন ও বজ্রপাতের কারণে ঘটে যাওয়া প্রাণহানি সহ বিভিন্ন দুর্ঘটনার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে এই ক্ষয়ক্ষতি রোধে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। জামায়াত ইসলামী সূত্রে জানা যায় কয়েক হাজার তালের বীজ রোপণ করার কথা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ বীজ না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আগামীতে এটা কয়েক হাজারের অধিক বীজ রোপণ করা হবে বলে জামাত নেতৃবৃন্দ জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,জামায়াতে ইসলামী সদর উপজেলা আমীর মাওঃ কামাল হোসেন, পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন আমীর মাওঃ ছালাহ্উদ্দিন এবং সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন কর্মপরিষদ সদস্য মাওঃ ইউছুফ আলী, আব্দুলা আল-মামুন, ইসমাঈল হোসেন, ডা কামাল হোসেন, ওয়ার্ড সভাপতি হাফেজ ছালাউদ্দিন, আব্দুল মতিন, হাফেজ মফিজুল ইসলাম সহ বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বশীল নেতাকর্মীগন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও এই বীজ রোপন কর্মসূচীতে অংশ নেয়।
ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর বলেন, এই বেড়ীটির দুইধারে কোনো গাছগাছালি না থাকায় বেড়ীবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশংকা ছিলো। আমরা আশা করি এই তালবীজ রোপনের ফলে বেড়ী-সড়কের দু'ধারে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি এটি টেকসই হবে।
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন আমীর বলেন, আমাদের গ্রামের ফসলের মাঠ থেকে ঘরবাড়ি অনেক দূরে হওয়ায় কৃষকরা মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে অনেকেই মারা যান। সেইসঙ্গে প্রতি বছর অনেক গবাদি পশু মারা যায় এ বজ্রপাতে। তাল গাছ এসব দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে পারে বলে এমন উদ্যোগ নিয়েছি।
ইউনিয়ন সেক্রেটারী বলেন, আমাদের মতো আপনারাও বাড়িতে পড়ে থাকা তালের বীজ বাড়ির আঙিনা কিংবা আশেপাশে রোপণ করুন। অথবা সেই বীজ তুলে দিন আমাদের হাতে। আসুন প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ও বজ্রপাত থেকে বাঁচতে তালের বীজ রোপণ করি।