ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

ভালো ফলনের আশায় কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

আজিজুর রহমান-কেশবপুর(যশোর):
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ ১০৮ বার পঠিত

কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।পুরুষের পাশাপাশি নারীরা একাজে
সহযোগিতা করছেন।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবার কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। এবার কেশবপুর উপজেলায় ১৪ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা।সরকারের দেওয়া বীজ,সার কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল।শনিবার ১৩ জানুয়ারী দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকরা ক্ষেতে গরুর বদলে মই টানছে মানুষ। আবার কেউ কেউ ইরি বোরো রোপণ ও রোপণের জন্য জমিতে পরিচর্যার কাজ করছে। জানা গেছে এক সময় এ এলাকার কৃষকদের ঘরে ঘরে গরু,জোয়াল এবং লাঙ্গলসহ কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল। কৃষকের জমি চাষের সাথে গরু ও মহিষের সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। সাধারণত কৃষি জমিতে গরু দিয়ে টানা লাঙ্গলে জমি চাষ ও মই দিয়ে চাষের জমি সমান করে ফসল লাগানো হয়ে থাকে। আধুনিক যুগে এসে যোগ হয়েছে ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর। গ্রামাঞ্চলে কৃষকের বড় পরিচয় ছিল যার বাড়িতে গরু, লাঙ্গল ও মই আছে।  উপজেলার বাগদহা এলাকায় এক কৃষক তার ছেলেকে নিয়ে ও বালিয়াডাঙ্গা এলাকার শশুর তার জামাইকে নিয়ে হালচাষের জন্য মই টানছেন।

এ সময় আরেক কৃষক এগিয়ে এসে তাদেরকে মই টানতে সহযোগিতা করেন। পিছনে একজন কৃষক মই ধরছেন আর সামনে কাঁধে জোয়াল এর বদলে দঁড়ির মাথায় কাঠি বেঁধে নিয়ে দুইজন কৃষক ক্ষেতে মই টানছেন।

কথা হয় বোরো ক্ষেতে গরুর বদলে মই টানতে থাকা উপজেলার বাগদহা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান হবির সঙ্গে। তিনি বলেন, জমি চাষাবাদ করে ছয় আট সদস্য পরিবারের সংসারের সারা বছরের যোগান দিতে হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায় ইরি বোরো চাষ ছাড়া অন্য ফসল তেমন না হওয়ায় হালের গরু পালন করা হয় না।

আগে আমারও হালের বলদ ছিল। সারা বছর গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আমাদের মত কৃষকের গরু পোষা সম্ভব না। এখন বিচালীসহ গো খাদ্যের অনেক দাম। গরু দিয়েই ক্ষেতে মই দিতে হয়। বর্তমানে আমার হালের বলদ না থাকাই সকাল থেকে বাবা-ছেলে মিলে ক্ষেতে মই টানছি। 

কৃষক হাবিবুর রহমান হবির ছেলে আবদুল মাজিদ বলেন, বাগদহা বিলে ৬ বিঘা জমিতে আমরা চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ করব। সকল জমিতেই গরুর বদলে নিজেদেরই মই টানতে হবে। মই টানতে সহযোগিতা করতে আসা কৃষক আবদুল জলিল বলেন, গরুর বদলে মই টানতে তিনজন মানুষের প্রয়োজন।

একজন দিয়ে মই টানা অসম্ভব। তাই প্রতিবেশী হিসেবে আরেক কৃষককে সহায়তার জন্য মই টানার কাজে আমি তাদেরকে সাহায্য করতে এসেছি।বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন,তিনি ওই গ্রামের একজন ভালো কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরি-বোরো আবাদ করে আসছেন। এবারও তিনি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এলাকায় হালের বলদ না পাওয়ায় ছেলেকে দিয়ে ক্ষেতের মই দিতে হচ্ছে। ওই কৃষকের ছেলে কবির হোসেন বলেন,সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করতে বোরো ক্ষেতে মই টানার কাজ করছি।

 ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ বলেন, আগে হাল চাষের জন্য প্রত্যেক কৃষকের ঘরে গরু, লাঙ্গল ও মই থাকতো। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙ্গল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরু টানা লাঙ্গল ও মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে পড়ে না। কেশবপুর থেকে হালের বলদ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সে কারণে তিনি নিজে ও ভাইদের সহযোগিতায় চলতি বোরো মৌসুমে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা ৭ বিঘা জমির উঁচু-নিচু অংশসহ চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছেন।

কিন্তু গ্রাম বাংলার কৃষকের গরু দিয়ে টানা হাল, মইয়ে জমি তৈরিতে সময় লাগতো। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙ্গল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরুর টানা লাঙ্গল, মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে না পড়লেও ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমির উঁচু-নিচু অংশ বা চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছে মানুষ। মইয়ে হালকা কিছু ওজন দিয়ে তা দু’জন কিংবা একজন টেনে জমির প্রয়োজনীয় অংশ দ্রুত সমান করে ফেলছে। এলাকার কৃষকরা জানান, পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমিতে চাকার দাগ থাকায় তা সমান করতে নিজেরা মই টেনে সমান করেছেন। ওই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, তার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চারা রোপণের পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে নেয়ার পর নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করে চারা রোপণ করছেন।ব্রক্ষকাটি গ্রামের কৃষক জামাল সরদার,হামিদ সরদার,আনিছুর সরদার,রামচন্দ্রপুর গ্রামের ময়েজউদ্দিন,আব্দুল সরদার,সুজাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান,বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুজনসহ আরো অনেক কৃষকরা এ প্রতিনিধি কে জানান,আধুনিক যন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হওয়ায় এখন গরুর লাঙ্গল, মই হারিয়ে যাচ্ছে।গরুর বদলে বিকল্প হিসেবে মানুষই মই টেনে জমি সমান করে নিচ্ছে।এমন দৃশ্য উপজেলার প্রায় সব জায়গায়। তারা আরো বলেন,এই উপজেলা জুড়ে কৃষকরা ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে

ও প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মামুদা আক্তার বলেন,এবার কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।এবার এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ করছেন কৃষকরা।

ট্যাগস :

ভালো ফলনের আশায় কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

কেশবপুরে ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।পুরুষের পাশাপাশি নারীরা একাজে
সহযোগিতা করছেন।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবার কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। এবার কেশবপুর উপজেলায় ১৪ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা।সরকারের দেওয়া বীজ,সার কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল।শনিবার ১৩ জানুয়ারী দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকরা ক্ষেতে গরুর বদলে মই টানছে মানুষ। আবার কেউ কেউ ইরি বোরো রোপণ ও রোপণের জন্য জমিতে পরিচর্যার কাজ করছে। জানা গেছে এক সময় এ এলাকার কৃষকদের ঘরে ঘরে গরু,জোয়াল এবং লাঙ্গলসহ কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল। কৃষকের জমি চাষের সাথে গরু ও মহিষের সম্পর্ক সেই আদিকাল থেকে। সাধারণত কৃষি জমিতে গরু দিয়ে টানা লাঙ্গলে জমি চাষ ও মই দিয়ে চাষের জমি সমান করে ফসল লাগানো হয়ে থাকে। আধুনিক যুগে এসে যোগ হয়েছে ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর। গ্রামাঞ্চলে কৃষকের বড় পরিচয় ছিল যার বাড়িতে গরু, লাঙ্গল ও মই আছে।  উপজেলার বাগদহা এলাকায় এক কৃষক তার ছেলেকে নিয়ে ও বালিয়াডাঙ্গা এলাকার শশুর তার জামাইকে নিয়ে হালচাষের জন্য মই টানছেন।

এ সময় আরেক কৃষক এগিয়ে এসে তাদেরকে মই টানতে সহযোগিতা করেন। পিছনে একজন কৃষক মই ধরছেন আর সামনে কাঁধে জোয়াল এর বদলে দঁড়ির মাথায় কাঠি বেঁধে নিয়ে দুইজন কৃষক ক্ষেতে মই টানছেন।

কথা হয় বোরো ক্ষেতে গরুর বদলে মই টানতে থাকা উপজেলার বাগদহা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান হবির সঙ্গে। তিনি বলেন, জমি চাষাবাদ করে ছয় আট সদস্য পরিবারের সংসারের সারা বছরের যোগান দিতে হয়। কিন্তু আমাদের এলাকায় ইরি বোরো চাষ ছাড়া অন্য ফসল তেমন না হওয়ায় হালের গরু পালন করা হয় না।

আগে আমারও হালের বলদ ছিল। সারা বছর গরু পালন করতে যে টাকা খরচ হয় তা দিয়ে আমাদের মত কৃষকের গরু পোষা সম্ভব না। এখন বিচালীসহ গো খাদ্যের অনেক দাম। গরু দিয়েই ক্ষেতে মই দিতে হয়। বর্তমানে আমার হালের বলদ না থাকাই সকাল থেকে বাবা-ছেলে মিলে ক্ষেতে মই টানছি। 

কৃষক হাবিবুর রহমান হবির ছেলে আবদুল মাজিদ বলেন, বাগদহা বিলে ৬ বিঘা জমিতে আমরা চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষ করব। সকল জমিতেই গরুর বদলে নিজেদেরই মই টানতে হবে। মই টানতে সহযোগিতা করতে আসা কৃষক আবদুল জলিল বলেন, গরুর বদলে মই টানতে তিনজন মানুষের প্রয়োজন।

একজন দিয়ে মই টানা অসম্ভব। তাই প্রতিবেশী হিসেবে আরেক কৃষককে সহায়তার জন্য মই টানার কাজে আমি তাদেরকে সাহায্য করতে এসেছি।বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন,তিনি ওই গ্রামের একজন ভালো কৃষক। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরি-বোরো আবাদ করে আসছেন। এবারও তিনি ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এলাকায় হালের বলদ না পাওয়ায় ছেলেকে দিয়ে ক্ষেতের মই দিতে হচ্ছে। ওই কৃষকের ছেলে কবির হোসেন বলেন,সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করতে বোরো ক্ষেতে মই টানার কাজ করছি।

 ফতেপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ বলেন, আগে হাল চাষের জন্য প্রত্যেক কৃষকের ঘরে গরু, লাঙ্গল ও মই থাকতো। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙ্গল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরু টানা লাঙ্গল ও মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে পড়ে না। কেশবপুর থেকে হালের বলদ প্রায় বিলুপ্তির পথে। সে কারণে তিনি নিজে ও ভাইদের সহযোগিতায় চলতি বোরো মৌসুমে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা ৭ বিঘা জমির উঁচু-নিচু অংশসহ চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছেন।

কিন্তু গ্রাম বাংলার কৃষকের গরু দিয়ে টানা হাল, মইয়ে জমি তৈরিতে সময় লাগতো। সময়ের সাথে আধুনিকতার ছোঁয়া এখন গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এখন ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জমি দ্রুত তৈরিতে গরু টানা লাঙ্গল ও মইয়ের পরিবর্তে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারে গরুর টানা লাঙ্গল, মই এখন কেশবপুরে তেমন একটা চোখে না পড়লেও ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমির উঁচু-নিচু অংশ বা চাকার দাগ সমান করতে গরুর পরিবর্তে মই টানছে মানুষ। মইয়ে হালকা কিছু ওজন দিয়ে তা দু’জন কিংবা একজন টেনে জমির প্রয়োজনীয় অংশ দ্রুত সমান করে ফেলছে। এলাকার কৃষকরা জানান, পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করা জমিতে চাকার দাগ থাকায় তা সমান করতে নিজেরা মই টেনে সমান করেছেন। ওই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, তার ৩ বিঘা জমিতে বোরো ধান চারা রোপণের পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে নেয়ার পর নিজেরাই মই টেনে জমি সমান করে চারা রোপণ করছেন।ব্রক্ষকাটি গ্রামের কৃষক জামাল সরদার,হামিদ সরদার,আনিছুর সরদার,রামচন্দ্রপুর গ্রামের ময়েজউদ্দিন,আব্দুল সরদার,সুজাপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান,বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুজনসহ আরো অনেক কৃষকরা এ প্রতিনিধি কে জানান,আধুনিক যন্ত্র দিয়ে দ্রুত জমি চাষ হওয়ায় এখন গরুর লাঙ্গল, মই হারিয়ে যাচ্ছে।গরুর বদলে বিকল্প হিসেবে মানুষই মই টেনে জমি সমান করে নিচ্ছে।এমন দৃশ্য উপজেলার প্রায় সব জায়গায়। তারা আরো বলেন,এই উপজেলা জুড়ে কৃষকরা ইরি বোরো রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে

ও প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মামুদা আক্তার বলেন,এবার কেশবপুর উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির পর পুরোদমে ইরি বোরো রোপণ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা।এবার এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে ইরি বোরো আবাদ করছেন কৃষকরা।