বাগেরহাটের চিতলমারীতে দেখা মিলছে তাল পাতার পাঠশালা। যে পাঠশালা আজও মনে করিয়ে দেয় পুরনো শিক্ষা ব্যবস্থার কথা। বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই পাঠশালার চিত্র দেখে তাল পাতায় লেখা মানুষেরা কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারিয়ে যান অতীতের দোয়াত কলমের জীবনে। এখানে দোয়াতের কালি আর বাঁশের কঞ্চির কলম দিয়ে তাল পাতায় লিখছে কোমলমতি শিশুরা। বর্তমান প্রজন্মের কাছে পাঠশালার এমন ছবি রূপকথার গল্প মনে হতে পারে।
নান্দনিক সেই স্মৃতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেলেও। এই স্মৃতিটুকু ধরে রেখেছেন সত্তরোর্ধ্ব পন্ডিত মহাশয় খ্যাত কালিপদ বাছাড়। সকাল হলে তার তাল পাতার পাঠশালায় কোমলমতি শিশুদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে। তিনি জানান তার পাঠশালা থেকে শিশুরা প্রথম অক্ষরজ্ঞান লাভ করে। তারা স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জন বর্ণ, বানান, যুক্তাক্ষর, শতকিয়া, নামতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এই তালপাতার পাঠশালা এলাকার থেকে শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া দক্ষিন পাড়া শিশু শিক্ষা নিকেতনটি ২০০৫ সালে স্থাপিত হয়ে ১৮ বৎসরাধিক চালু রয়েছে। পন্ডিত কালিপদ আরো জানান, এই দীর্ঘ সময় তিনি কোমল মতি শিশুদের হাতে খড়ি দিয়ে আসছেন। বিনিময় প্রতি শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে বর্তমান ১৫০ টাকা পারিশ্রমিক বাবদ গ্রহন করছেন।
স্থানীয় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, এ পাঠশালায় প্রায় অর্ধশত শিশু তালপাতায় অক্ষর চর্চা করে। তাল পাতায় অক্ষর চর্চায় হাতের লেখা ভালো হয়। শিশুরা সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহনের পাশাপাশি গান, কবিতা, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার চর্চা করছে। এসময় তারা বৃদ্ধ পন্ডিত মহাশয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞপন করেন।