বড়াইগ্রামে স্বামীর লাশ দেখতে গিয়ে মারপিটে আহত নববধূসহ স্বজনরা
- আপডেট সময় : ০৭:২২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ২৭ বার পঠিত
বড়াইগ্রামে বিষাক্ত মদপানে মৃত স্বামীকে দেখতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন নববধূসহ তার স্বজনরা। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাগডোব গ্রামে এই ঘটনা
ঘটে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আহতরা জানান, তিন মাস আগে বাগডোব গ্রামের প্রভাত কুমারের ছেলে জয়ন্ত কুমারের সাথে নাটোর শহরতলীর হাজরা নাটোর এলাকার শ্যামল চন্দ্রের মেয়ে শতাব্দি রাণীর বিয়ে হয়।
শনিবার দূর্গাপূজা উপলক্ষে জয়ন্ত শ্বশুড়বাড়িতে বেড়াতে যান। রাতে জয়ন্ত বাড়ির বাইরে কোথাও গিয়ে মদপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে চলে যান।
রোববার সকালে পুনরায় অসুস্থতা বোধ করলে তাকে প্রথমে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে এবং পরে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলন তাকে এ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন ছাড়াই মাইক্রোবাসে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
সেখানেচিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তিনি মারা যান।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার ডা. আল মাসুদ মো: মিজানুর রহমান বিষাক্ত মদপানে জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার বিকেলে জয়ন্তের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় জয়ন্তের স্ত্রী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ১০-১২ জন স্বজনসহ মরদেহ দেখতে যান। এ সময় মরদেহ দেখতে না দিয়ে জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনসহ অন্যরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর চড়াও হয়।
এ সময় নববধূসহ তাদের স্বজনদের এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সবাইকে উদ্ধার করে। পরে আহত ৭ জনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নববধূ শতাব্দি রাণীর অভিযোগ, জ্যাঠাতো ভাই মিলনই জয়ন্তের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সে কেন মদপানে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগীকে অক্সিজেন ছাড়া প্রাইভেট
গাড়িতে রাজশাহী নিয়ে গেল? কেন তার মৃত স্বামীর মুখটা দেখতে না দিয়ে সবাইকে মারপিট করলো?
বিষয়টির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি চান
তিনি। জয়ন্তের মৃত্যু ও মারপিট বিষয়ে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি। জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,পাবলিক উত্তেজিত হয়ে সবাইকে মারপিট করেছে।
আপনিও নিজে উপস্থিত থেকে মারধর করেছেন এমন কথা বলতেই মিলন উত্তেজিত হয়ে জানান,এ বিষয়ে কোনও কথা বলতে চাই না। পরে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মারপিটে আহতদের পুলিশ উদ্ধার করে নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।