বগুড়ায় বিচারকের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে মাদক মামলার আসামিদের অব্যাহতি দেওয়ার অভিযোগে আদালতের তিন কর্মচারীসহ ৫ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বগুড়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা ওই পাঁচ আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ১৬ অক্টোবর পুলিশের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ওই আবেদনের শুনানী শেষে বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি কামরুজ্জামানের একদিন এবং অন্য ৪জনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে নেওয়া অপর ৪ আসামি হলেন, বগুড়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জারীকারক এম এ মাসুদ, উমেদার হারুন অর রশীদ সাজন, বগুড়া জেলা আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বেঞ্চ সহকারি আব্দুল মান্নান এবং আলোচিত মাদক মামলার অন্যতম আসামি মোক্তার হোসেন।
মোক্তার হোসেন প্রায় ৩ বছর আগের ২৬০ পিস ইয়াবা উদ্ধার সংক্রান্ত বগুড়া সদর থানার একটি মামলায় চলতি বছরের ১৪ মে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল। তবে সেদিন শুনানীর পর থেকে ওই মামলার নথি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় ৬ মাস পর গত ১৪ অক্টোবর সেই মামলার নথি খুঁজে পাওয়া গেলেও তাতে দেখা যায় আলোচিত ওই মাদক মামলার স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪৯ ধারায় করা ওই আবেদন সংশ্লিষ্ট আদালতে নথিভুক্ত দেখিয়ে সেই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট র্মিজা শায়লার স্বাক্ষর জাল করে তা মঞ্জুর করে আসামিদের অব্যাহতির আদেশও প্রদান করা হয়েছে।
বিষয়টি বিচারক মির্জা শায়লার নজরে এলে তিনি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দেন। এরপর বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাকছুদুর রহমান বাদী হয়ে গত ১৬ অক্টোবর বগুড়া সদর থানায় আদালতের ৩ কর্মচারীসহ ৯জনের বিবরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এর পরপরই পুলিশ বর্তমানে রিমান্ডে নেওয়া ওই ৫জনকে গ্রেফতার করে। ওই মামলার অপর ৪ আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ্ জানান, তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে।