বগুড়ায় ডাকাতির অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার এ সব তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গতকাল সোমবার বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। জেলা পুলিশের দাবি, এই তিনজন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর মোঃ খোকন মিয়া (৩৫), বগুড়ার শাজাহানুরের মোঃ মোজ্জাফর হোসেন (৩৫) এবং সদর উপজেলার শিকারপুর পূর্বপাড়া এলাকার মো: ফরিদ উদ্দিনের ছেলে সিএনজি চালক মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৩)। খোকন ও বিপুল বগুড়া সদরের ভাড়া বাসায় থাকতেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার জানান, গত ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আব্দুল মালেক চাচাতো ভাই মোঃ রাকিবুল হাসান আকিল ও প্রতিবেশী ছোট ভাই মোঃ মনিরকে নিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে চিকাশী ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায় এসে দেখেন পাকা রাস্তার উপর কাটা গাছ পড়ে আছে। এটা দেখে তারা সেখানে থামলে কয়েকজন এসে তাদের মারধর শুরু করেন।
মারধরের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী তিনজনের কাছে থাকা এক লাখ দুই হাজার টাকা ও প্রায় ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের তিনটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
এঘটনায় ১২ অক্টোবর ভুক্তভোগী আব্দুল মালেক বাদী হয়ে বগুড়ার ধুনট থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এরপর থেকেই মামলার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে গোপন সংবাদ পেয়ে ডিবি ও ধুনট থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে সোমবার সকাল ১০টার দিকে সদরের চকসূত্রাপুর এলাকা থেকে খোকনকে গ্রেফতার করে। খোকনের দেয়া তথ্যে সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার হরিগাড়ী ইসলামপুর এলাকা থেকে বিপুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইভাবে ওইদিন বিকেলে মাটিডালী সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে নজরুলকে গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের দেখানো জায়গা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১ টি হেক্সাব্লেড, ১ টি ধারালো বটি, ১ টি বার্মিজ চাকু, প্লাস্টিকের দড়ি, ১টি সিএনজি এবং ডাকাতি করা ৪ টি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘ দিন ধরে উত্তরবঙ্গের বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে পথরোধ করে ডাকাতি, ছিনতাই অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছিল।
গ্রেফতার তিন জন আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য উল্লেখ করে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায় খোকনের নামে বগুড়া ও গাইবান্ধার বিভিন্ন থানায় চুরি ও ডাকাতিসহ ৮টি মামলা রয়েছে। আর বিপুলের নামে চুরি, ডাকাতি ও হত্যাসহ ৮টি এবং নজরুলের বিরুদ্ধে চারটি মামলার সন্ধান মিলেছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে তাদের আদালতে চালান করা হবে।