ফুরসা প্রাথমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষিকা মিনতি রানী বিশ্বাসের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
- আপডেট সময় : ০৮:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪ ৪৪ বার পঠিত
ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুরসা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান মিনতী রানী বিশ্বাসের বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৫ বছর প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন ।
এই দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে আলো ছড়িয়েছেন ফুরসা গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে। জড়িয়ে পড়েছেন মায়ার বন্ধনে, নিজের সংসারের মতো আগলিয়ে রেখেছেন প্রতিষ্ঠানকে। তবুও জীবনের শেষভাগে এসে বিদায় জানাতে হলো প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে। তার এ বিদায় যেন রঙিন ভালবাসা আর আবেগে পরিণত হলো।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে তাকে ব্যতিক্রমীভাবে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চলে নানা আয়োজন। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়কে রঙিনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। হাজির হয় প্রাক্তন ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা সহ এলাকাবাসী।
মিনতী রানী বিশ্বাস ১৯৮৭ সালে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। এরপর ১৯৮৯ সালে ফুরসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত একই বিদ্যালয়ে কেটে যায় জীবনের ৩৫ টি বছর। তার হাত ধরেই বিদ্যালয়ের দোচলা ঘর থেকে ভবন হয়ে উঠেছে, অনেকে শিক্ষা জীবনে ও কর্মজীবনে উচ্চ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কণ্যার জননী এবং কানাইপুর ইউনিয়নের হলুদবাড়িয়া গ্রামের মাধব ভৌমিকের স্ত্রী।
মিনতী রানী বিশ্বাস অবসরে গিয়ে নিজের সংসার ও সন্তানদের সময় দিতে চান। তবে এ বিদায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এই স্কুল ছিল আমার সংসারের মত।
তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়ে আমার সফলতা মধ্যে কিছু কৃতি সন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারসহ উচ্চ পর্যায়ের মানুষ রয়েছেন। তারা এখনও আমাকে সম্মান করে, খোঁজ খবর নেয়। যার প্রমাণ আজও পেলাম। তারা এমন সুন্দর একটি আয়োজন করেছে, আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
এ অনুষ্ঠানের শুরুতে তাকে ফুল ছিটিয়ে ও সম্মান প্রদর্শন করেন ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। পরে মূল অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সহকর্মীবৃন্দ, প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ ও এলাকাবাসী। পরে সম্মাননা ক্রেস্টও তুলে দেন তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নার্গিস জাফরী। কানাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোঃ আলতাফ হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কান্নাজড়িত কন্ঠে বক্তব্য রাখেন
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ হাসান আহমেদ তিনি বলেন আমরা আমাদের প্রিয় অভিভাবককে বিদায় না দিতে চাইলেও বিদায় দিতে হচ্ছে। শুধু তার স্মৃতি আমাদের মাঝে রয়ে যাবে। এই মহান মানুষটি আমরা শুধু সহকর্মী হিসেবে পাইনি, পেয়েছি একজন অভিভাবক হিসেবে।
তার স্মৃতিচারণ করে সহকারী শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন
,ইউপি সদস্য মো: লিয়াকত শেখ,বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রকৌশলী রুবেল আহমেদ।
অনুষ্ঠান শেষে সাদা মাইক্রোবাসে বিদায় জানানো হয়। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ক্ষুদে শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী সহ উপস্থিত সকলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। হাত নেড়ে নেড়ে তাকে বিদায় জানানো হয়। এ সময় তিনিও হাত নেড়ে প্রিয়জনদের বিদায় জানান।