ঢাকা ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিরামপুরে ভুয়া এনজিওর মাধ্যমে ও ভুয়া টিসিবির কার্ড বিতরণের দায়ে অর্থদণ্ড পাইকগাছায় মটরসাইকেল-বাইসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে নি-হ-ত-১  ডুমুরিয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেঝ ভাইকে কু‌পি‌য়ে হত্যা ক‌রে‌ছে ছোট ভাই জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বিএনপির সমাবেশে হামলা ডুমুরিয়ায় পাওনা টাকা  চাওয়ায়  এক মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীকে জীবন নাশের হুমকি আশুলিয়ায় বিদেশি মদসহ দুই কারবারি আটক কুড়িগ্রামের রাজারহাটে জোর পূর্বক পাকা ধান কেটে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ রংপুরে বিএনপি ও ড্যাব এর সহযোগিতায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত বাগেরহাট জেলাকে মাদকমুক্ত রাখতে জেলা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও লিফলেট বিতরণ দীর্ঘ দেড় বছর পর হিলি স্থলবন্দরে চাল আমদানি শুরু

পাংশায় ভাতিজিকে স্ত্রী দাবি করার অভিযোগ ইউপি সদস্য হারুনের বিরুদ্ধে

মো. শামীম হোসেন- পাংশা (রাজবাড়ী):
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪ ১০১ বার পঠিত

সম্বদ্বীর স্ত্রীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আশ্রয় নেন সম্বন্ধীর বাড়ি। সুকৌশলে হয়ে ওঠেন সম্বদ্বীর পরিবারের অভিভাবক। অভিভাবক সেজে সম্বদ্বীর নাবালক মেয়েকে একাধিকবার বিয়ে দিয়ে ঘটিয়েছেন বিচ্ছেদ। ছেলে পক্ষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন কাবিনের টাকা।

এখানেই থেমে থাকেননি। সম্বদ্ধীর সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে নিজের ছেলের সাথে সম্বদ্ধীর মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। ছেলের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সুকৌশলে সম্বদ্ধীর মেয়েকে নিজেই বিয়ে করেছেন। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সম্বদ্ধীর বাড়ি বানিয়েছিলেন নিজের মাদক ব্যাবসার আস্থানা। এসব অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদ ইউনিয়নের কানুখালী গ্রামের হুরমত আলী বিশ্বাসের ছেলে। এলাকায় তিনি মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি তিন বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে করতেন মাদক ব্যবসা। এলাকায় তার বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলতে চায় না কেউ। জানা যায়, ইউপি সদস্য হরুন অর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হারুনের সম্বদ্ধী মো. আলতাব হোসেন বলেন, গত ৬ বছর ধরে আমার বোনজামাই (হারুন মেম্বর) আমার মেয়েকে নিয়ে আমাদের উপর বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছে। সে আওয়ামী লীগের অনেক শক্তিশালী মেম্বর। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না। দুইদিন আগে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। আমি এই অত্যাচারের বিচার চাই।

আলতাব হোনেসের স্ত্রী শেফালি বেগম বলেন, আমি ২০১৩ সাল থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমার দুইটা মেয়ে, কোন ছেলে সন্তান নেই। আমার চিকিৎসা করাতে বিভিন্ন জায়গা ছোট ননদা (হারুন মেম্বর) আমাদের সাথে গিয়ে সহযোগিতা করে। তখন থেকে আমরাও তাকে অনেক বিশ্বাস করি এবং দিনরাত প্রায় আমার বাড়িতেই থাকতো। তার ইচ্ছায়, তার দেখানো ছেলের সাথে আমার মেয়েকে দুইবার দুইটা ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। দুই জায়গা থেকেই সে আমার মেয়ের সংসার ভেঙে দেয়। একটি ছেলে পক্ষের কাছ থেকে দুই লাখ টাকাও নিয়েছে। পরে তার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে মেয়েকে গোপনে আবার বিয়ে দেই। বিষয়টি জানার পর হারুন আমার মেয়েকে স্ত্রী দাবি করে কোটের একটি হলফনামা দেখায়। আমাদের সহায় সম্পত্তি আমার দুই মেয়ের নামে। হরুন এই সম্পত্তির লোভেই আমার মেয়েকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। হারুনের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই।

হারুনের সম্বদ্ধীর মেয়ে জানান, আমার দুই জায়গা থেকেই যখন বিয়ে ভেঙে যায়। তখন আমার ফুপা হরুন মেম্বার আমাকে সাদা স্ট্যাম্প দেখিয়ে বলে, তোর জীবনতো নষ্ট হয়ে গেল, তোর নামে ব্যাংকে কিছু টাকা রাখবো তুই এই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দে। পরে আমি ওই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেই। সেই স্ট্যাম্পে কোট থেকে আমাদের বিয়ের হলফনামা করে আনে। হঠাৎ সে আমাকে বলে তুই আমার বিয়ে করা বউ। আমাকে ডিভোর্স দিয়ে তার পর বিয়ে অন্য কোথাও করবি। তার ছেলের সাথে আমার বিয়ের কথা বলেছিলো। আমি রাজি হইনি। এখন সে আমার এই সংসারটাও ভেঙে দেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, আমার স্ত্রীর বড় ভাই মো. আলতাবের (আমার সম্বদ্বী) বাড়িতে নির্ঘদিন থেকেছি। সম্বদ্ধীর মেয়ে সম্পর্কে আমার ভাস্তি হয়। আমার ভাস্তির দুই জায়গা থেকে সংসার ভেঙে গেছে। তারা অসহায়ত্ব বোধ করে তার মেয়ের (আমার ভাস্তিকে) আমার পিছনে লেলিয়ে দিয়ে আমাকে ব্লাকমেল করে আমার সাথে বিয়ে দিয়েছে।
তিনি জানান, ২০২২ সালে ভাস্তি সাথে বিয়ে হয় তার। তার পর থেকেই ভাস্তির সাথে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে দিন কাটিয়েছে তারা। তবে বিষয়টি বাহিরের কেউ জানতো না।

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট থেকে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে সুষ্ঠু সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি। তবে বিবাহের বিষয়ে উভয় পক্ষের সাক্ষী না থাকলে তা বৈধ হবে না। এ বিষয়ে অভিযুক্ত হারুন মেম্বার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোন ঝামেলা করলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পাংশায় ভাতিজিকে স্ত্রী দাবি করার অভিযোগ ইউপি সদস্য হারুনের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪

সম্বদ্বীর স্ত্রীর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে আশ্রয় নেন সম্বন্ধীর বাড়ি। সুকৌশলে হয়ে ওঠেন সম্বদ্বীর পরিবারের অভিভাবক। অভিভাবক সেজে সম্বদ্বীর নাবালক মেয়েকে একাধিকবার বিয়ে দিয়ে ঘটিয়েছেন বিচ্ছেদ। ছেলে পক্ষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন কাবিনের টাকা।

এখানেই থেমে থাকেননি। সম্বদ্ধীর সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে নিজের ছেলের সাথে সম্বদ্ধীর মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। ছেলের সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সুকৌশলে সম্বদ্ধীর মেয়েকে নিজেই বিয়ে করেছেন। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সম্বদ্ধীর বাড়ি বানিয়েছিলেন নিজের মাদক ব্যাবসার আস্থানা। এসব অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. হারুন অর রশিদ ইউনিয়নের কানুখালী গ্রামের হুরমত আলী বিশ্বাসের ছেলে। এলাকায় তিনি মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি তিন বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে করতেন মাদক ব্যবসা। এলাকায় তার বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলতে চায় না কেউ। জানা যায়, ইউপি সদস্য হরুন অর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হারুনের সম্বদ্ধী মো. আলতাব হোসেন বলেন, গত ৬ বছর ধরে আমার বোনজামাই (হারুন মেম্বর) আমার মেয়েকে নিয়ে আমাদের উপর বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছে। সে আওয়ামী লীগের অনেক শক্তিশালী মেম্বর। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারে না। দুইদিন আগে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। আমি এই অত্যাচারের বিচার চাই।

আলতাব হোনেসের স্ত্রী শেফালি বেগম বলেন, আমি ২০১৩ সাল থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমার দুইটা মেয়ে, কোন ছেলে সন্তান নেই। আমার চিকিৎসা করাতে বিভিন্ন জায়গা ছোট ননদা (হারুন মেম্বর) আমাদের সাথে গিয়ে সহযোগিতা করে। তখন থেকে আমরাও তাকে অনেক বিশ্বাস করি এবং দিনরাত প্রায় আমার বাড়িতেই থাকতো। তার ইচ্ছায়, তার দেখানো ছেলের সাথে আমার মেয়েকে দুইবার দুইটা ছেলের সাথে বিয়ে দেয়। দুই জায়গা থেকেই সে আমার মেয়ের সংসার ভেঙে দেয়। একটি ছেলে পক্ষের কাছ থেকে দুই লাখ টাকাও নিয়েছে। পরে তার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে মেয়েকে গোপনে আবার বিয়ে দেই। বিষয়টি জানার পর হারুন আমার মেয়েকে স্ত্রী দাবি করে কোটের একটি হলফনামা দেখায়। আমাদের সহায় সম্পত্তি আমার দুই মেয়ের নামে। হরুন এই সম্পত্তির লোভেই আমার মেয়েকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। হারুনের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে চাই।

হারুনের সম্বদ্ধীর মেয়ে জানান, আমার দুই জায়গা থেকেই যখন বিয়ে ভেঙে যায়। তখন আমার ফুপা হরুন মেম্বার আমাকে সাদা স্ট্যাম্প দেখিয়ে বলে, তোর জীবনতো নষ্ট হয়ে গেল, তোর নামে ব্যাংকে কিছু টাকা রাখবো তুই এই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দে। পরে আমি ওই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেই। সেই স্ট্যাম্পে কোট থেকে আমাদের বিয়ের হলফনামা করে আনে। হঠাৎ সে আমাকে বলে তুই আমার বিয়ে করা বউ। আমাকে ডিভোর্স দিয়ে তার পর বিয়ে অন্য কোথাও করবি। তার ছেলের সাথে আমার বিয়ের কথা বলেছিলো। আমি রাজি হইনি। এখন সে আমার এই সংসারটাও ভেঙে দেওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, আমার স্ত্রীর বড় ভাই মো. আলতাবের (আমার সম্বদ্বী) বাড়িতে নির্ঘদিন থেকেছি। সম্বদ্ধীর মেয়ে সম্পর্কে আমার ভাস্তি হয়। আমার ভাস্তির দুই জায়গা থেকে সংসার ভেঙে গেছে। তারা অসহায়ত্ব বোধ করে তার মেয়ের (আমার ভাস্তিকে) আমার পিছনে লেলিয়ে দিয়ে আমাকে ব্লাকমেল করে আমার সাথে বিয়ে দিয়েছে।
তিনি জানান, ২০২২ সালে ভাস্তি সাথে বিয়ে হয় তার। তার পর থেকেই ভাস্তির সাথে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে দিন কাটিয়েছে তারা। তবে বিষয়টি বাহিরের কেউ জানতো না।

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট থেকে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে সুষ্ঠু সমাধানের পরামর্শ দিয়েছি। তবে বিবাহের বিষয়ে উভয় পক্ষের সাক্ষী না থাকলে তা বৈধ হবে না। এ বিষয়ে অভিযুক্ত হারুন মেম্বার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোন ঝামেলা করলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।