নিয়মিত অফিস করেন না করাসহ ভূমি কর পরিশোধ ও নামজারি করতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তানজুল ইসলাম স্বপনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তানজুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমি অফিস করব কি করব না এটা দেখার দায়ীত্ব আমার কর্তৃপক্ষের।
এটা দেখার দায়ীত্ব সাংবাদিকের না। এটা দেখবে আমার এসিল্যান্ড। তার দাবি তিনি এসিল্যান্ডের নিকট থেকে ছুটি নিয়েছেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করছেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তিনি নিয়মিত অফিস না কারায় বিভিন্ন কাজে বেক পোহাতে হচ্ছে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার।
অনিয়মিত অফিস করা ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, উক্ত অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আক্কাস।
জানা যায়, যশাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা তানজুল ইসলাম স্বপন নিয়মিত অফিস করেন না। তার বাড়ি পাশ্ববর্তী বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। অফিস থেকে তার নিজ বাড়ির দুরত্ব ৬-৮ কিলোমিটার। নিজ বাড়ির কাছাকাছি অফিস হওয়ায় পারিবারিক ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থকেন তিনি।
এ বিষয়ে যশাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আক্কাস বলেন, দির্ঘ ১৫ দিন ছুটির পর গত ১৪ আগষ্ট (সোমবার) অফিসে যোগদান করেন তানজুল ইসলাম স্বপন। ১৫ আগষ্ট (মঙ্গলবার) বিকাল ৩ টার আগেই ব্যক্তিগত কাজে অফিস থেকে চলে যান। ১৫ দিন ছুটির পূর্বেও তিনি অনিয়মিত অফিসে আসতেন। ২টা ৩টা বাজার আগেই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অফিস থেকে চলে যেতেন। ১৬ আগষ্ট (বুধবার) তিনি অফিসেই আসেনি। কোন ছুটিও নেয়নি। শুনেছি তার বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণ কাজ চলছে। বিল্ডিংয়ের ছাঁদ ঢালাই কাজের জন্য বাড়িতে আছে। তার অফিসের কাজগুলো অনেক সময় আমার করতে হয়। এভাবে অফিস চালানো সম্ভব না।
উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তানজুল ইসলাম স্বপনের বিরুদ্ধে ভূমি কর পরিশোধ ও নামজারিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিপূর্বে কয়েক জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কথা শুনেছিলাম। অভিযুক্তদের সাথে সাথে কথা বলে ঝামেলা মিটিয়ে দিয়েছিলাম। এ সমব বিষয়ে অফিসিয়াল ভাবে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে মৌখিকভাবে এসিল্যান্ড স্যারকে জানানো হয়েছিল। তিনি সম্প্রতি একেবারেই অনিয়মিত অফিস করছেন। আমি তার বিরুদ্ধে এসিল্যান্ড বারাবর লিখিত অভিযোগ দেব।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তানজুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমি এসিল্যান্ড সারকে ফোন দিয়ে মৌখিকভাবে ছুটি নিয়েছি। আর আমি অফিস করব কি, করব না। আপনি (সাংবাদিক) দেখার কে? আমার অফিস প্রধান আছে, এসিল্যান্ড স্যার আছে। তারা বিষয়টি দেখবে।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি এসব কথা পান কোথায়? শুধু যশাই ইউনিয়ন ভূমি অফিস আপনার চোখে পড়ে? উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাবেন। গিয়ে খোঁজখবর রাখবেন তারা টাকা নেয় কিনা। আমি কোন টাকা-পয়শা নেই না।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাসুদুর রহমান রুবেল বলেন, তার সাথে আমার কোন কথা হয়নি। তিনি আমার কাছ থেকে কোন ছুটি নেয়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তিনি অফিস না করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কোন অভিযোগ পেলেও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।