নারী এমপিকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
- আপডেট সময় : ০৬:৩১:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৩ ৫৮ বার পঠিত
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের উপস্থিতিতে এক আলোচনা সভায় জামালপুর-শেরপুর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য হোসনে আরাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিচার দাবিতে স্থানীয় নারীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকালে সংসদ সদস্য হোসনে আরার অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ইসলামপুর পৌর শহরের রেলগেট এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে থানা মোড় বটতলা চত্বরে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে প্রায় ৫ শতাধিক বিভিন্ন বয়সের নারীরা অংশ নেন। পরে সেখানে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন নারী সমাজ।
এতে ইসলামপুর পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সিনারের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, আকলিমা বেগম, হাবিবা খাতুন, বানেছা বেগম, নাজমা আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এমপি হোসনে আরার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটা বাস্তবিক পক্ষেই দলের জন্য ক্ষতিকর। একজন নারী এমপিকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকের কাজ নয়। এ ঘটনায় আমরা লজ্জিত। এমপিকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেন তাঁরা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মিনারা বেগম বলেন, একজন নারীকে থাপ্পড় দেওয়া মানে আমাকে থাপ্পড়। পুরো নারী সমাজকে থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে।
জুলেখা নামে এক গৃহিণী বলেন,গত সপ্তাহে দলীয় কার্যালয়ে প্রতিমন্ত্রীর সামনে এঘটনা ঘটেছে এখন পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি তাই আমরা বাধ্য হয়েই রাস্তায় নেমেছি।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম জাফর ইকবাল জাফু উপস্থিত নারীদেরকে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচার করার আশ্বাস দেন। পরে নারীরা বাড়ি ফিরে যান।
উল্লেখ্য যে,গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ‘১৭ আগষ্ট নৃশংস বর্বরোচিত সিরিজ বোমা হামলা দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি।
এমপি হোসনে আরা অভিযোগ করেন, সভায় চলাকালে তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষক নেতা আনোয়ারুল ইসলাম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে তাকে থাপ্পড় মারে নেতা আনোয়ারুল ইসলাম। পরে এমপি হোসনে আরা সভা ত্যাগ করেন।
তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন অভিযুক্ত আনোয়ারুল ইসলাম।
এ বিষয়ে এমপি হোসনে আরা বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। দলীয় কার্যালয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী উপস্থিতে আমাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার বিচার দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে কি না, সেটা খুব একটা জানি না আমি। তবে লোকমুখে শোনেছি, নারীরা আমাকে অপমান করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এটাকে আমি সমর্থন দিই না। আগে জানতে পারলে, সেটা বন্ধ করে দিতাম।
কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ভুক্তভোগী এমপি হোসনে আরা আরও বলেন,
‘আমার গায়ে হাত তোলা মানে, জাতীয় সংসদের সব সদস্যের গায়ে হাত তোলার শামিল। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সামনে এমন ঘটনা ঘটবে, সেটা কখনোই আশা করিনি। দেখি দল কী সিদ্ধান্ত নেয়।’
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সংরক্ষিত আসনের এমপি হোসনে আরাকে লাঞ্ছিত হওয়ার উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তদন্ত শেষ গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’