ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চরভেলামারি গ্রামের হতদরিদ্র হাসিম উদ্দিন হাসুর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা রেখা আক্তার(২০) কে উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুণাকান্দা গ্রামের মোঃ আজিজুল ইসলামের পুত্র মোঃ তাইজুল ইসলাম (২৩)ও তার পরিবার নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করার প্রতিবাদে হত্যাকরীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৪মে শনিবার বিকেলে উপজেলার ১৩নং চরবেতাগৈর ইউনিয়নের ভেলামারি আতাউরের মোর রেখা আক্তারের পরিবার ও এলাকাবাসী এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
মানববন্ধনে নিহত রেখার মা রমিছা খাতুন বলেন গত ২৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার ঈশ্বরগঞ্জ থানা থেকে মুঠোফোনে জানালে আমরা ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে আমার মেয়েকে মৃত দেখতে পাই ও জানতে পারি
গভীর রাতে গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা রেখা আক্তারকে (২০) নান্দাইল হাসপাতালে না নিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন তার স্বামী-শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন। তবে রেখা মারা গেছেন জানতে পেরে পালিয়ে যান তাঁর স্বামী মো. তাইজুল ইসলাম (২৩)। এ সময় জরুরি বিভাগের লোকজন শ্বশুর আজিজুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে দেয়। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিত্সক নিশাত আনজুমান মিতু জানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পান ওই নারী পথেই মারা গেছেন। হূদরোগ বা অন্য কোনো জটিল রোগ ছিল না।
ধারণা করা হয়, নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হতে পারে। নিহতের গলায় , পিঠে ও পেটে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মেয়েকে নির্যাতনের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে রেখার মা রমিজা খাতুন জানান অটোরিক্সা কেনার জন্য ২ লক্ষ টাকা দাবি করলে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিলে অটোরিকশা না কিনে সেই টাকা খরচ করে আবার টাকার জন্য চাপ দেয় তাইজুল। পূনরায় টাকা দিতে না পারায় চলছিল নির্যাতন।হাসপাতাল থেকে রেখার লাশ উদ্ধার করেছেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল সরকার তিনি জানান, সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে নিহত রেখার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।
নান্দাইল থানার ওসি মো. আব্দুল মজিদ জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্ট ও দাফন করার সময় রেখাকে গোসল দেয়ার সময় উপস্থিত বাবুলের স্রী রোজিনা (১৯) জানান মৃতের গলায়,পিটে, পেটে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে জলন্ত সিগারেট দিয়ে ছেকা দেওয়ার দাগ রয়েছে।
এদিকে নান্দাইল মডেল থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন রমিছা খাতুন ও তার পরিবারের লোকজন।
অপরদিকে গৃহবধূ রেখার শশুর মোঃ আজিজুল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি সুরাইয়া বেগম অন্তু:সত্বার কথা স্বীকার করে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
হতদরিদ্র ভূক্তভোগি হতদরিদ্র পরিবার অন্ত:সত্বা রেখার হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।