ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

ধামরাইয়ে ক্লু-লেস মমতাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন

মোঃ শামীম আহমেদ-সাভার (ঢাকা):
  • আপডেট সময় : ১১:২৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১০৬ বার পঠিত

 

ঢাকার ধামরাইয়ে চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস মমতাজ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যার মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারী শরীফ প্রধান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

গ্রেপ্তার শরীফ প্রধান (৩৭) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন কাচারীকান্দি পাঁচকিত্তা গ্রামের ছলিমুল্লাহ’র ছেলে। তিনি পেশায় একজন গামেন্টস কর্মকর্তা ও বিবাহিত। গত ২০ বছর ধরে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

ভিকটিম মমতাজ বেগম (৩৩) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন রঘুনাথপুর গ্রামের হারেজ মিয়ার ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন৷

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ জানান, আসামি শরীফ সম্পর্কে ভিকটিম মমতাজের বোনের দেবর অর্থাৎ ভিকটিম ও আসামি সম্পর্কে বেয়াই-বেয়াইন।

ভিকটিম মমতাজ তালাকপ্রাপ্ত ও তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং তাদের গ্রামের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ার সুবাদে ঘটনার এক মাস আগে মমতাজকে আশুলিয়ায় এনে গামেন্টসে চাকরি দিয়ে দেন শরীফ।

একপর্যায়ে সে ভিকটিমের সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। আসামি শরীফ ভিকটিমের নিকট হতে দুই লাখ টাকা ধারও নেন। ভিকটিম টাকা ফেরত দেয়াসহ বিয়ের জন্য শরীফকে চাপ দেয়। এতে আসামি শরীফ ক্ষিপ্ত হয়ে মমতাজকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করেন।

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরও জানান, আসামি শরীফ তার পরিকল্পনামতে ভিকটিম মমতাজের ভাড়া বাসা পরিবর্তন করে নতুন স্থানে বাসা ভাড়া করে দেন।

এর পরে শরীফ মমতাজকে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপদ একটি জায়গা খুঁজতে থাকেন। ঘটনার আগের দিন ৭ জানুয়ারি শরীফ ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের কেলিয়া এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উত্তর পাশের ঘটনাস্থল ভুট্টাক্ষেত পরিদর্শন করতে যান। পর দিন ৮ জানুয়ারি বিকেলবেলা মমতাজকে বেড়ানোর কথা বলে ধামরাই এলাকায় নিয়ে যান।

পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তারা ঘুরতে ঘুরতে ঘটনাস্থল ভুট্টাক্ষেতের দিকে যান এবং সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার সঙ্গে থাকা নাইলনের রশি দিয়ে প্রথমে ভিকটিমের গলায় পেঁচিয়ে ধরেন।

ভিকটিম যেন চেঁচামেচি করতে না পারে, সেজন্য ভিকটিমের পরিহিত ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ধামরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম মমতাজের মরদেহ উদ্ধার করেন এবং একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৩)।

এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারী তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর কালশী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শরীফ প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ আসামি শরীফকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করলে তিনি সেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

জবানবন্দি শেষে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।

ট্যাগস :

ধামরাইয়ে ক্লু-লেস মমতাজ হত্যার রহস্য উদঘাটন

আপডেট সময় : ১১:২৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

 

ঢাকার ধামরাইয়ে চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস মমতাজ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক হত্যার মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারী শরীফ প্রধান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে, বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

গ্রেপ্তার শরীফ প্রধান (৩৭) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন কাচারীকান্দি পাঁচকিত্তা গ্রামের ছলিমুল্লাহ’র ছেলে। তিনি পেশায় একজন গামেন্টস কর্মকর্তা ও বিবাহিত। গত ২০ বছর ধরে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

ভিকটিম মমতাজ বেগম (৩৩) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানাধীন রঘুনাথপুর গ্রামের হারেজ মিয়ার ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় মেয়ে। তিনি আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন৷

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ জানান, আসামি শরীফ সম্পর্কে ভিকটিম মমতাজের বোনের দেবর অর্থাৎ ভিকটিম ও আসামি সম্পর্কে বেয়াই-বেয়াইন।

ভিকটিম মমতাজ তালাকপ্রাপ্ত ও তার একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় এবং তাদের গ্রামের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ার সুবাদে ঘটনার এক মাস আগে মমতাজকে আশুলিয়ায় এনে গামেন্টসে চাকরি দিয়ে দেন শরীফ।

একপর্যায়ে সে ভিকটিমের সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। আসামি শরীফ ভিকটিমের নিকট হতে দুই লাখ টাকা ধারও নেন। ভিকটিম টাকা ফেরত দেয়াসহ বিয়ের জন্য শরীফকে চাপ দেয়। এতে আসামি শরীফ ক্ষিপ্ত হয়ে মমতাজকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করেন।

পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আরও জানান, আসামি শরীফ তার পরিকল্পনামতে ভিকটিম মমতাজের ভাড়া বাসা পরিবর্তন করে নতুন স্থানে বাসা ভাড়া করে দেন।

এর পরে শরীফ মমতাজকে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপদ একটি জায়গা খুঁজতে থাকেন। ঘটনার আগের দিন ৭ জানুয়ারি শরীফ ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের কেলিয়া এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উত্তর পাশের ঘটনাস্থল ভুট্টাক্ষেত পরিদর্শন করতে যান। পর দিন ৮ জানুয়ারি বিকেলবেলা মমতাজকে বেড়ানোর কথা বলে ধামরাই এলাকায় নিয়ে যান।

পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক তারা ঘুরতে ঘুরতে ঘটনাস্থল ভুট্টাক্ষেতের দিকে যান এবং সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার সঙ্গে থাকা নাইলনের রশি দিয়ে প্রথমে ভিকটিমের গলায় পেঁচিয়ে ধরেন।

ভিকটিম যেন চেঁচামেচি করতে না পারে, সেজন্য ভিকটিমের পরিহিত ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ধামরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম মমতাজের মরদেহ উদ্ধার করেন এবং একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৩)।

এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারী তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর কালশী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শরীফ প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ আসামি শরীফকে বিজ্ঞ আদালতে উপস্থাপন করলে তিনি সেচ্ছায় নিজের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

জবানবন্দি শেষে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।