ঢাকা ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবির ঘটনায় ৭ জেলে নিখোঁজ 

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের অংশগ্রহণ উৎসাহব্যঞ্জক

পুলক সরকার-কুষ্টিয়া:
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৩৫ বার পঠিত

‘এ বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী আর অর্ধেক তার নর।’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এই কবিতার লাইন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে পৃথিবীর মঙ্গলময় সৃষ্টিতে নারীর রয়েছে সমান অবদান। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, ব্যবসাবাণিজ্য, প্রবাস, আইসিটি মোটকথা অর্থনীতি প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীর অবদান বাড়ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় ক্ষেত্র পোশাক শিল্পে একটি বিপুলসংখ্যক নারী কাজ করছে। শহরে কর্মজীবী নারীর সঙ্গে গ্রামীণ নারীরাও হাতের কাজ যেমন- নকশিকাঁথা বোনা, বাঁশ ও বেতের কাজ ছাড়াও নানা হস্তশিল্প, হাঁস-মুরগির খামার, গাভী পালন, পাখি ও কবুতরের খামার, কৃষি কাজ ইত্যাদি নানাভাবে সংসারের আর্থিক অবস্থা পুণ:গঠনে সাহায্য করছে। কাজের জন্য নারীরা বিদেশে যাচ্ছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যে, ১৯৯১ সাল থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৬ জন নারী প্রবাসে কাজ করতে গেছেন।

২০০৫-০৬ এর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ২০ লাখ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলত কৃষিকাজ, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত।

গ্রামে প্রায়ই ছোটোখাটো দোকান চালাতে দেখা যায় নারীদের। ঘরে বসে আজ ই-কমার্সের যুগে ব্যবসা করছেন নারীরা। ২০১০ সালে যেখানে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ছিল ১৬ দশমিক ২ লাখ সেখানে ২০১৬-১৭ সালে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৬ লাখ। এই সময়ের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা কিন্তু অতীত কাল থেকেই অবহেলিত হলেও নারীদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। ঘরের কোণ থেকে বের হয়ে আজ মহাশূন্য পর্যন্ত তাদের পদচিহ্ন রাখছে সফলতার সঙ্গে। নারী শক্তি বাদ দিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা অসম্ভব। তবে কাজের ক্ষেত্র বাড়লেও কমেনি নারীর ওপর সহিংসতার হার।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশে ১১৫৪ জন নারীর যৌতুকের আগুনে জীবন বিনষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে ১৯৭ জন, ২০১৩ সালে ২৪৫ জন, ২০১৪ সালে ২৩৬ জন, ২০১৫ সালে ২০৩ জন, ২০১৬ সালে ১৭৩ জন নারীর জীবন যৌতুকের আগুনে ধ্বংস হয়েছে। মূলত বাল্যবিয়ে এবং যৌতুক নামক এক ভয়ংকর প্রাচীন কিন্তু আধুনিক জীবনের আদিমতা থেকে আজও বের হতে পারেনি এ দেশ।

নারীর মেধা এবং পারদর্শিতার স্বীকৃতি দিতে কার্পণ্য করা ব্যক্তির এ সমাজে অভাব নেই। অধিকার ফলানোতেই যেন তাদের আনন্দ সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশের আজ যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এর পেছনে রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান। ২০৪১ সালে উন্নত দেশের যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে চলেছে তা পূরণ করতে হলে পুরুষের সঙ্গে নারীকেও এগিয়ে যেতে হবে।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের অংশগ্রহণ উৎসাহব্যঞ্জক

আপডেট সময় : ০৪:৫২:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩

‘এ বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী আর অর্ধেক তার নর।’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এই কবিতার লাইন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে পৃথিবীর মঙ্গলময় সৃষ্টিতে নারীর রয়েছে সমান অবদান। শিক্ষা, কৃষি, শিল্প, ব্যবসাবাণিজ্য, প্রবাস, আইসিটি মোটকথা অর্থনীতি প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীর অবদান বাড়ছে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় ক্ষেত্র পোশাক শিল্পে একটি বিপুলসংখ্যক নারী কাজ করছে। শহরে কর্মজীবী নারীর সঙ্গে গ্রামীণ নারীরাও হাতের কাজ যেমন- নকশিকাঁথা বোনা, বাঁশ ও বেতের কাজ ছাড়াও নানা হস্তশিল্প, হাঁস-মুরগির খামার, গাভী পালন, পাখি ও কবুতরের খামার, কৃষি কাজ ইত্যাদি নানাভাবে সংসারের আর্থিক অবস্থা পুণ:গঠনে সাহায্য করছে। কাজের জন্য নারীরা বিদেশে যাচ্ছে।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যে, ১৯৯১ সাল থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৬ জন নারী প্রবাসে কাজ করতে গেছেন।

২০০৫-০৬ এর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের ১ কোটি ২০ লাখ নারী শ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলত কৃষিকাজ, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ ইত্যাদি কৃষি সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত।

গ্রামে প্রায়ই ছোটোখাটো দোকান চালাতে দেখা যায় নারীদের। ঘরে বসে আজ ই-কমার্সের যুগে ব্যবসা করছেন নারীরা। ২০১০ সালে যেখানে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ছিল ১৬ দশমিক ২ লাখ সেখানে ২০১৬-১৭ সালে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৬ লাখ। এই সময়ের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা কিন্তু অতীত কাল থেকেই অবহেলিত হলেও নারীদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে। ঘরের কোণ থেকে বের হয়ে আজ মহাশূন্য পর্যন্ত তাদের পদচিহ্ন রাখছে সফলতার সঙ্গে। নারী শক্তি বাদ দিয়ে দেশের অগ্রযাত্রা অসম্ভব। তবে কাজের ক্ষেত্র বাড়লেও কমেনি নারীর ওপর সহিংসতার হার।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশে ১১৫৪ জন নারীর যৌতুকের আগুনে জীবন বিনষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে ১৯৭ জন, ২০১৩ সালে ২৪৫ জন, ২০১৪ সালে ২৩৬ জন, ২০১৫ সালে ২০৩ জন, ২০১৬ সালে ১৭৩ জন নারীর জীবন যৌতুকের আগুনে ধ্বংস হয়েছে। মূলত বাল্যবিয়ে এবং যৌতুক নামক এক ভয়ংকর প্রাচীন কিন্তু আধুনিক জীবনের আদিমতা থেকে আজও বের হতে পারেনি এ দেশ।

নারীর মেধা এবং পারদর্শিতার স্বীকৃতি দিতে কার্পণ্য করা ব্যক্তির এ সমাজে অভাব নেই। অধিকার ফলানোতেই যেন তাদের আনন্দ সীমাবদ্ধ। বাংলাদেশের আজ যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এর পেছনে রয়েছে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অবদান। ২০৪১ সালে উন্নত দেশের যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে চলেছে তা পূরণ করতে হলে পুরুষের সঙ্গে নারীকেও এগিয়ে যেতে হবে।