দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন
- আপডেট সময় : ১১:৫২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩ ২৯৪ বার পঠিত
মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছ্নে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
বিএসএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা জামান এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘উনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আগে থেকেই তার হার্টের সমস্যা ছিল। আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে নতুন করে তার আরেকটি অ্যাটাক হয়।
‘আমরা ওনার ছেলেকে ডাকিয়েছি। তার লাইফ সাপোর্টের যে ইনটিউবিশন টিউব ছিল সেগুলো খুলে নেয়া হবে কিনা তা নিয়ে কথা বলেছি। অবশেষে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ওনাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।’
এর আগে রোববার (১৩ আগস্ট) বিকালে তিনি কারাগারের ভেতরে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেখান থেকে রাতেই তাকে জরুরী অবস্থায় ঢাকায় হস্তান্তর করা হয়।
কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ বন্দি আছেন। সেখানে থাকা অবস্থায় রোববার বিকাল ৫টার দিকে তিনি বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরে রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন সাঈদী।পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন তার বাবার প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় একটি মাদরাসায়। তিনি ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন ও পরে খুলনা আলিয়া মাদরাসায় স্থানান্তরিত হন। বাংলা, উর্দু, আরবি ও পাঞ্জাবি ভাষায় দক্ষ এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও তার দক্ষতা রয়েছে।
১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচনী জোট গঠন করে এবং তিনি এই নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।