রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় বাবাকে আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার ৩ সপ্তাহের ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে শামীম মোল্লা (১৬) নামে এক যুবকের। তার সাথে থাকা অপর বন্ধু আলামিন সরদার (১৬) গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহত যুবক দৌলতদিয়া ৫ নং ওয়ার্ড সোহরাব মন্ডল পাড়া'র মো. এরশাদ মোল্লা'র ছেলে। আহত যুবক একই এলাকার মো. ইয়াকুব সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শামীম মোল্লা ৩ সপ্তাহ আগে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য পরিবারকে আত্মহত্যার ভয় দেখান। তার বাবা ছেলেকে বাঁচানোর জন্য তিন সপ্তাহ আগে একটি পালসার মোটরসাইকেল কিনে দেয়। তার বাবা বলেন, কে জানতো এই মোটরসাইকেলই হবে তার কাল!
শনিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে বাড়ি থেকে শামীম তার বন্ধু আলামিনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন। ফরিদপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে গোয়ালন্দ উপজেলার গোধূলি বিনোদন পার্ক এলাকার পৌঁছালে মোটরসাইকেলের গতি থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে থাকা সিমেন্টের খুঁটির সাথে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন তারা দুইজনই। তখন স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায় তারপর সেখান থেকে শামীমকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে গতকাল সন্ধ্যায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছানোর আগেই পদ্মা সেতুর পার হওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সেই তার মৃত্যু হয়।
সরেজমিন রবিবার (২৪ মার্চ) বেলা ১২ টার দিকে শামীমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, তাকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। তার বাবার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার আর কি বলার আছে! আমার ছেলে আত্মহত্যা করবে বলে মোটরসাইকেল কিনে দিলাম। সেই মোটরসাইকেলেই আমার ছেলের মৃত্যু হলো। শামীমের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।