ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নাগেশ্বরী উপজেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের কমিটি গঠন পত্রিকার প্রকাশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দৈনিক রাজবাড়ী কন্ঠের প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান পাইকগাছায় দু’পক্ষের বিরোধ ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের ৩জন গুরুতর জখম রাজবাড়ীতে শিক্ষকদের লাঞ্চিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোয়ালন্দ পাক দরবার শরিফ নিয়ে গুজব ছড়ানো সংবাদের প্রতিবাদ প্রথমবারের মতো সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সংসদ থেকে যত টাকা খোয়া গেছে আশুলিয়ায় ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবীতে ভুক্তভোগী নারীর সংবাদ সম্মেলন দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

কেশবপুরে ঐতিহ্য খেজুরের রস সংগ্রহে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত গাছিরা

আজিজুর রহমান-কেশবপুর(যশোর):
  • আপডেট সময় : ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ১১২ বার পঠিত

কেশবপুরে ঐতিহ্য খেজুরের রস সংগ্রহে গাছের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা।

রবিবার ১৯ নভেম্বর দুপুরে বিভিন্ন মাঠে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে গাছিরা বিখ্যাত খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। গাছের পরিচর্যার কারণে যোনো দম ফেলার সময় নেই তাদের। এদিকে খেজুরের রস ত্রুয় করা সাধারণ মানুষ বলছেন বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য ঘরের পানিতে ও মিনি ইট ভাটারে কাজে জ্বালালী
ব্যবহার করার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। রস সংগ্রহ করা গাছিরা বলছেন,এবছর ২ শত থেকে ২৫০ টাকা দরে প্রতি ভাড় রস বিক্রিয় হবে। এ ঐতিহ্য খেজুরের রস ও গুড় কেশবপুর উপজেলায় চাহিদা রয়েছে বেশ। আর এ খেজুরের গুড় কেশবপুরের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে যশোর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রস সংগ্রহ গাছিরা জানান,শীতের শুরুতেই আমরা রস সংগ্রহের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এখন থেকে গাছের পরিচর্যার কাজ শুরু হয়েছে।ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহ করা জন্য গাছের পরিচর্যার কাজ শুরু করেছে।কয়েকদিন বাদে রস সংগ্রহ শুরু হবে। যশ খেজুরের রস’ এই প্রবাদ কে সত্য করে তুলতে আর কয়েক দিনের মধ্যে উপজেলায় প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে শুরু হবে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ  সাথে সাথে নতুন ধানের চাউল দিয়ে গুড়া তৈরি পর রসের পিঠা। খেজুরের রস দিয়ে  তৈরি হবে গুড় -পাটালি তৈরির উৎসব। তাই শীত মৌসুম শুরু হতে না হতেই রস ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর রস সংগ্রহের কাজে । ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের ডেগো ছাটাই করা তারপর এক সপ্তাহ অপেক্ষা। এরপর আবার ধারারো দা দিয়ে সোনালী অংশ বের করা হয়।যাকে আমরা গ্রামের ভাষায় বলি চাচ দেওয়া। চাচ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে বাঁশের থেকে তৈরি কেশবপুরের ভাষায় যেটা বলে নলি বসিয়ে মাটির তৈরি ভাড় পেতে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। প্রভাতের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদর জানান দিচ্ছে শীতের আগমীর বার্তা। এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে কেশবপুরের  গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত বাড়বে। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের রস,গুড় ও প্রোতভাবে জড়িত। এখানকার কারিগরদের দানা গুড় পাটালি গুড় তৈরিতে ব্যাপক সুনাম থাকায় খেজুরের গুড় পাটালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে ও দেশের বাহিরে। খেজুরের রস, গুড় এবং পাটালি কেশবপুরের গৌরব ও ঐতিহ্য বহন করছে। এই মৌসুমে শীতের সকালে গাছীরা গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে প্রতি মোড়ে মোড়ে অবস্থান করে সেখান থেকে যাদের বাড়িতে রস নাই সেই রস নিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটায়। এই ভাবে চলে আসছে বছরের পর বছর। উপজেলার ব্রাহ্মকাটি গ্রামের শওকত হোসেন,জামাল সরদার,বাবু সরদার,ওমর আলী সরদার,মশিয়ার রহমান গাজী,ওলিয়ার রহমান গাজী,গড়ভাঙ্গা গ্রামের জামাল মোড়ল,সোবরাব হোসেন,আব্দুল হান্নান সহ বিভিন্ন এলাকার রস সংগ্রহ করা গাছিরা এ প্রতিনিধি কে গানে গানে জানান,গাছ কাটতে যাবো বউ খিলি দুয়ে সন্ধ্যার রস ঝড়ে এনে তোরে খাওয়াবো। তারা আরো বলেন,কেশবপুরের খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা রয়েছে বেশ। এ বছর বিখ্যাত খেজুরের রস ও গুড় বেশি দামে বিত্রুি হবে। কারণ দিন দিন কেশবপুর উপজেলা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই দামেও বেশি। বিগত ১০/১২ বছর আগে প্রতি ভাড় খেজুরের রস ১৫/২০ টাকা দরে বিক্রি করা হতো। এখন শ্রমের দাম বেশি হওয়ায় আর কম দামে বিক্রি হয় রস।

ট্যাগস :

কেশবপুরে ঐতিহ্য খেজুরের রস সংগ্রহে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত গাছিরা

আপডেট সময় : ০৬:১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

কেশবপুরে ঐতিহ্য খেজুরের রস সংগ্রহে গাছের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা।

রবিবার ১৯ নভেম্বর দুপুরে বিভিন্ন মাঠে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে গাছিরা বিখ্যাত খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। গাছের পরিচর্যার কারণে যোনো দম ফেলার সময় নেই তাদের। এদিকে খেজুরের রস ত্রুয় করা সাধারণ মানুষ বলছেন বিভিন্ন এলাকায় মৎস্য ঘরের পানিতে ও মিনি ইট ভাটারে কাজে জ্বালালী
ব্যবহার করার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। রস সংগ্রহ করা গাছিরা বলছেন,এবছর ২ শত থেকে ২৫০ টাকা দরে প্রতি ভাড় রস বিক্রিয় হবে। এ ঐতিহ্য খেজুরের রস ও গুড় কেশবপুর উপজেলায় চাহিদা রয়েছে বেশ। আর এ খেজুরের গুড় কেশবপুরের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে যশোর সহ বিভিন্ন অঞ্চলে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রস সংগ্রহ গাছিরা জানান,শীতের শুরুতেই আমরা রস সংগ্রহের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এখন থেকে গাছের পরিচর্যার কাজ শুরু হয়েছে।ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহ করা জন্য গাছের পরিচর্যার কাজ শুরু করেছে।কয়েকদিন বাদে রস সংগ্রহ শুরু হবে। যশ খেজুরের রস’ এই প্রবাদ কে সত্য করে তুলতে আর কয়েক দিনের মধ্যে উপজেলায় প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে শুরু হবে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ  সাথে সাথে নতুন ধানের চাউল দিয়ে গুড়া তৈরি পর রসের পিঠা। খেজুরের রস দিয়ে  তৈরি হবে গুড় -পাটালি তৈরির উৎসব। তাই শীত মৌসুম শুরু হতে না হতেই রস ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর রস সংগ্রহের কাজে । ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের ডেগো ছাটাই করা তারপর এক সপ্তাহ অপেক্ষা। এরপর আবার ধারারো দা দিয়ে সোনালী অংশ বের করা হয়।যাকে আমরা গ্রামের ভাষায় বলি চাচ দেওয়া। চাচ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে বাঁশের থেকে তৈরি কেশবপুরের ভাষায় যেটা বলে নলি বসিয়ে মাটির তৈরি ভাড় পেতে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। প্রভাতের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদর জানান দিচ্ছে শীতের আগমীর বার্তা। এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে কেশবপুরের  গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ তত বাড়বে। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে খেজুরের রস,গুড় ও প্রোতভাবে জড়িত। এখানকার কারিগরদের দানা গুড় পাটালি গুড় তৈরিতে ব্যাপক সুনাম থাকায় খেজুরের গুড় পাটালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে ও দেশের বাহিরে। খেজুরের রস, গুড় এবং পাটালি কেশবপুরের গৌরব ও ঐতিহ্য বহন করছে। এই মৌসুমে শীতের সকালে গাছীরা গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে প্রতি মোড়ে মোড়ে অবস্থান করে সেখান থেকে যাদের বাড়িতে রস নাই সেই রস নিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটায়। এই ভাবে চলে আসছে বছরের পর বছর। উপজেলার ব্রাহ্মকাটি গ্রামের শওকত হোসেন,জামাল সরদার,বাবু সরদার,ওমর আলী সরদার,মশিয়ার রহমান গাজী,ওলিয়ার রহমান গাজী,গড়ভাঙ্গা গ্রামের জামাল মোড়ল,সোবরাব হোসেন,আব্দুল হান্নান সহ বিভিন্ন এলাকার রস সংগ্রহ করা গাছিরা এ প্রতিনিধি কে গানে গানে জানান,গাছ কাটতে যাবো বউ খিলি দুয়ে সন্ধ্যার রস ঝড়ে এনে তোরে খাওয়াবো। তারা আরো বলেন,কেশবপুরের খেজুরের রস ও গুড়ের চাহিদা রয়েছে বেশ। এ বছর বিখ্যাত খেজুরের রস ও গুড় বেশি দামে বিত্রুি হবে। কারণ দিন দিন কেশবপুর উপজেলা থেকে খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তাই দামেও বেশি। বিগত ১০/১২ বছর আগে প্রতি ভাড় খেজুরের রস ১৫/২০ টাকা দরে বিক্রি করা হতো। এখন শ্রমের দাম বেশি হওয়ায় আর কম দামে বিক্রি হয় রস।