ভোলায় প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৪:২৫:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩ ৮৫ বার পঠিত
ভোলা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন (LDDP) প্রকল্পের ১১২ টি পোল্ট্রি ঘর নির্মানে ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মূরগী পালন গ্রুপের সদস্যদের পদ থেকে বাদ দেয়ার হুমকী, ভয়ভীতি প্রদর্শন, জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেয়া, নিয়মবহির্ভূত ঠিকাদার ব্যবহার করা, নকশা অনুযায়ী ঘর তৈরী না করা, নিন্মমানের মালামাল ব্যবহার করা এবং সদস্যদের নামে বরাদ্দকৃত টাকার চেক প্রদান না করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সম্পূর্ণ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেন সুবিধাভোগী মূরগী পালন খামারিরা।
খামারি সদস্যদের অভিযোগে জানা যায়, নারীদের আত্মকর্মসংস্থান ও অর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নারী খামারিদের স্বাবলম্বি করতে আধুনিক মুরগী পালন ঘর তৈরীতে প্রত্যেক খামারিকে ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী উপকূলীয় জেলা ভোলা প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পে দুইটি উপজেলায় ঘর তৈরির কাজ চলছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া, বাপ্তা ও উত্তর দিঘলদী এই ৩ ইউনিয়নে ১১২ জন সদস্যের মাঝে আধুনিক মুরগীর ঘর তৈরি করতে প্রত্যেক সদস্যকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই বরাদ্দকৃত টাকা প্রজেক্ট অফিসার (ডাঃ শাহিনের স্ত্রী) নাদিরা বেগম বরাদ্দকৃত টাকা প্রজেক্ট থেকে তার স্বামী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদের বরাবরে প্রেরন করে। উক্ত টাকা জুন মাসে ভোলা ডাস্ বাংলা ব্যাংকে ক্রস চেকের মাধ্যমে সদস্যদের একাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়। কিন্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাস্ বাংলা ব্যাংক ভোলা শাখার ম্যানেজারের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে প্রত্যেক সদস্যদের চেক তুলে নেয়। দুই মাস পার হলেও টাকা বা চেক পায়নি সদস্যরা।
এদিকে, প্রজেক্টের ফিল্ড সহকারী আল আমিন এবং ব্যাংকের এক কর্মচারীকে দিয়ে সদস্যদের সদস্য পদ বাতিল করার হুমকি দিয়ে, ভয়ভীতি দেখিয়ে, জোরপূর্বক সকল সদস্যের চেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের যোগসাজশে ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে নেয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদ।
বরাদ্দের এই টাকা দিয়ে সদস্যরা নিজেরাই নকশা অনুযায়ী মুরগির ঘর তৈরী করার নির্দেশনা থাকলেও নিয়মবহির্ভূত ভাবে কথিত ঠিকাদার দ্বারা ৮ – ১০ হাজার টাকা খরচ করে অতি নিন্মমানের মালামাল দিয়ে কিছু ঘর তৈরী করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে সদস্যরা। ফলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদ ও একই অফিসে কর্মরত তার স্ত্রী প্রজেক্ট অফিসার নাদিরা বেগম এর দূর্নীতির কারনে ভেস্তে যেতে বসেছে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ভোলায় মুরগী পালন নারী খামারিদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রকল্প।
বিষয়টি তদন্ত করে দূর্নীতি পরায়ন ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন খামারিরা।
এ বিষয়ে প্রজেক্ট অফিসার নাদিরা বেগম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মূখ খুলবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তিনি ।
এ সব অনিয়ম ও দূর্ণীতি’র বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদ সাংবাদিকদের কোনো রকম তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং অতি দাম্ভিকতার সাথে বলেন, কোথায়ও কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী সব চলছে।
এসব বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ইন্দ্রজিত মন্ডল অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ২/১ জন সদস্য আমাকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানিয়েছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।