কেশবপুরে পাটের বাম্পার ফলন হলেও জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
- আপডেট সময় : ০৯:৫৭:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২৮ বার পঠিত
কেশবপুরে সোনালী আঁশ পাট চাষে বাম্পার ফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আঁশ পাট চাষে বাম্পার ফলন চাষীরা।
অনুকূল আবহাওয়া ও সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ার কারণে চলতি মৌসুম এই উপজেলায় পাটের পাম্পার ফলন হয়েছে।
গত বছরের দাম ভালো পাওয়ায় এবার লক্ষ্য মাত্রার থেকে ৯০ হেক্টর জমিতে বেশি হয়েছে পাটের আবাদ। কিন্তু খাল-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রীমা আক্তার এ প্রতিনিধি কে বলেন,কেশবপুরে চলতি বছর ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ১০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ২৮০ মেঃ টন। গত বছর এ উপজেলায় পাট আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর ৯০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। এবার জেআরও ৫২০ জাতের ৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টর,রবি-১ জাতের ১২ হেক্টর ও দেশি গুটি জাতের ৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করেছেন কৃষকরা। ত্রিমোহিনী,সাগরদাঁড়ি,মজিদপুর,বিদ্যানন্দকাটি,মঙ্গলকোট,কেশবপুরসদর,পাঁজিয়া,সুফলাকাটি,গৌরিঘোনা,সাতবাড়িয়া, হাসানপুর, ইউনিয়নে ও একটি পৌরসভায় পাট চাষ করেছে কৃষকরা।ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় খেত থেকে পাট কাটা শুরু করেছেন কৃষকেরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাল-বিলে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব কৃষকরা। এসব কৃষকরা পাট কেটে ভ্যানযোগে করে নিয়ে বিভিন্ন নদীতে পাট জাগ দিয়েছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষক মোস্তফা জানান, ‘গত বছর বাজারে পাটের দাম বেশি দেখে এবার বেশি করে জমিতে বীজ বুনেছিলাম। ভালো ফলন হওয়ায় খেতে বিঘা প্রতি ১৭ থেকে ১৮ মণ পাট হতে পারে বলে আশা করছি। ব্রক্ষকাটি গ্রামের জিয়াউর গাজী,জাহাঙ্গীর গাজী,আচিন সরদার, জামাল সরদার সহ অনেক কৃষকরা জানান,আমরা কিছুদিন আগে পাট কেটে পানির অভাবে জাগ দেওয়ার তেমন কোনো জায়গা না পাওয়া নদীতে পাট জাগ দিয়েছে।পাট আবাদে খরচ হলেও পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি করতে পারলে ভালোই লাভবান হবেন বলে তারা জানান। কিন্তু খাল-বিলে পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে কষ্ট হচ্ছে বলেও তারা জানান।ভাগতী নরেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান,শহিদুল ইসলাম,আব্দুর রশিদ বলেন, ইউরিয়া ১২ টাকা ছাড়িয়ে ২৮ টাকা, পটাশ ১৪ টাকা থেকে ২২ টাকা, ড্যাব ১৬ টাকা থেকে ২২ টাকাসহ সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার বেশি ভালো হবে না।
প্রতাপপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী সরদার বলেন, বিলে ৪ বিষা জমিতে লাগানো পাট গত রোববার থেকে কাটা শুরু করেছি। খেতে পাটের আবাদ ভালো হওয়ায় দাম আগের মতো থাকলে ভালোই লাভ হবে এবার।’ একই গ্রামের কৃষক ফজলু বিশ্বাস জানান, গত বছর কুষ্টা (পাট) বেচে ভালোই লাভ করেছি। এ আশায় এই বার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে লাগাইছি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বীথি বলেন, এ বছর ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছর পাটের বাজারমূল্য বেশি পাওয়ায় এ উপজেলার চাষীরা পাট আবাদে ঝুঁকেছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও সময় মতো বৃষ্টির কারণে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত বছরের ন্যায় এবারও আশা করছি কৃষকরা পাট বিক্রি করে ভালো দাম পাবেন। তবে খাল-বিলে পানির অভাবে পাট জাগ দিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।